চলতি বছর যে ১৯ হাজার ব্রিটিশ পবিত্র হজ পালন করেছেন তাদের মধ্যে সৌদি আরবে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত সিমন পল কলিস এবং তার স্ত্রী হুদা মুকারখেচও রয়েছেন। এই দম্পতির হজ করার একাধিক ছবি প্রকাশ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের মর্যাদাপূর্ণ সংবাদপত্র আরব নিউজে।
হাজীরা যে সাদা পোশাক পড়ে হজব্রত পালন করেন সেই পোশাক পড়ে স্বামী স্ত্রীর হাসিমুখের ছবির পাশাপাশি কাবা শরিফের ভেতরেও সিমন পল কলিসের ছবিও প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। এই ছবিগুলো টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্ট্রাগামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পশ্চিমা দুনিয়ায় যখন ইসলাম নিয়ে নানা নেতিবাচক খবর প্রকাশ হচ্ছে, তখন ব্রিটিশ কূটনীতিকের এই ইসলাম গ্রহণ এই ধর্মটির আবেদন আরও বাড়িয়ে দেবে বলে লিখেছে আরব নিউজ।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইট বার্তায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৌদি লেখক ও অধ্যাপক ফৌজিয়া আল বকর। ফৌজিয়া বককের টুইটের জবাবও দিয়েছেন ওই দম্পতি।
এই টুইটে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত তার ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি লিখেন, ‘গত ৩০ বছর ধরেই আমি মুসলিম সমাজে অবস্থানের পর হুদাকে বিয়ে করার আগেই আমি ইসলাম গ্রহণ করি।’
সিমন পল কনিস ১৯৭৮ সালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে।
পাঁচ সন্তানের জনক কনিস ১৯৮১ থেকে ৮৪ সাল পর্যন্ত বাহরাইনে ব্রিটিশ দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেন। এরপর ১৯৯১ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত দিল্লি দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি, ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দুবাই এবং ২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বার্সায় ব্রিটিশ কাউন্সিল জেনারেল ছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কাতার, ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সিরিয়া এবং ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইরাকে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ছিলেন কনিস।
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ইসলাম গ্রহণের খবরটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর বহু মানুষ তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এদের একজন সৌদি রাজকুমারী বাছমাহ বিনত সৌদ। তিনি এক টুইটে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রদূত ও তার স্ত্রীকে বিশেষ অভিনন্দন।’ জবাবে তাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন সিমন পল কনিস।
তবে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ইসলাম গ্রহণ ও হজ পালনের বিষয়ে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। আরব নিউজ লিখেছে, কিছু কূটনীতিক ও সাংবাদিকও এ বিষয়ে জানেন।’
সৌদি আরবে হজ করতে যাওয়া ব্রিটিশরাও এই খবরে উৎফুল্ল হয়েছেন। কাউন্সিল অব ব্রিটিশ হাজিসের প্রধান নির্বাহী রশিদ মোগ্রাদিয়া নামে একজন বলেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক হজ করায় আমি রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা তার সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য মুখিয়ে আছি।’