প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র নেতৃত্বাধীন বৃটিশ মন্ত্রিসভার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ফাটলটি বেরিয়ে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেই মন্ত্রী ডেভিড ডেভিসের সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে । ওদিকে ব্রেক্সিটের পক্ষের প্রচারণা শিবিরের যেমনটা দাবি অভিবাসন সিস্টেম হতে হবে পয়েন্টভিত্তিক, তার পক্ষে নন প্রধানমন্ত্রী। এমনটা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে অভিবাসন বিষয়টিকে নিখাবে তেরেসা মে নিয়ন্ত্রণ করবেন সে বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয় নি। তিনি ইইউতে বৃটেনের জন্য একক বাজার ধরে রাখার পক্ষে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেন, বৃটেনের ইউরোপীয় একক বাজারে (সিঙ্গেল মার্কেট) থাকাটা ‘অত্যন্ত অসম্ভব’ বলে ডেভিড ডেভিস যে মন্তব্য করেছিলেন, তা ‘তার ব্যক্তিগত মতামত’। এটা সরকারের নীতি নয়। সোমবার ইইউ বিষয়ক এই মন্ত্রী হাউজ অব কমন্সে বলেছিলেন, যদি একক বাজারের মধ্যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ অনুমোদন না করা হয় তবে যুক্তরাজ্যকে সম্ভবত এই বাজার থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। পরে এক ব্রিফিংয়ে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডেভিড ডেভিসের ওই মন্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতি নয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র। তবে ঠিক কীভাবে সরকার এই ইস্যুতে সামনে এগিয়ে যাবে তার কোনো রূপরেখাও দেখান নি তিনি। ডেভিড ডেভিস সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলছেন কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র বলেন, ওই বিবৃতি মন্ত্রীর অভিমত এবং এই বিষয়ে ‘ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী’ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোনোকিছুকে সম্ভাব্য বা অসম্ভাব্য বলাটাকে আমি কার্যত কোনো নীতি মনে করি না। তিনি এটাকে অসম্ভাব্য বলেছেন। এটা সম্ভব নয় বলে তিনি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীকে নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এই কাজকে চালু রাখতে চান। তিনি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীকে স্বীকৃতি দেন এবং এ কারণেই এ বিষয়ে আমাদের করণীয়গুলো করে যেতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী হলোÑ আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে, এমন ফলাফল বের করে নিয়ে আসার জন্য কাজ করা উচিত।’ ডাউনিং স্ট্রিটের এমন মন্তব্য এটাই নির্দেশ করে যে, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এখনও বৃটেনকে ইউরোপের একক বাজারে অন্তর্ভুক্ত রাখার আশা পুরোপুরি ছাড়েন নি। তবে তিনি ও তার আশেপাশে থাকা নেতারা অবশ্য ব্রেক্সিটের পরিণতি নিয়ে খুব একটা খোলাখুলি বক্তব্য রাখছেন না। ‘ব্রেক্সিটের অর্থ হলো ব্রেক্সিট’ (ব্রেক্সিট মিনস ব্রেক্সিট)Ñ এই ধোঁয়াশাপূর্ণ স্লোগানই তারা দিয়ে যাচ্ছেন।
একটা বিষয় তেরেসা মে নিশ্চিত করেছেন। সেটা হলোÑ ব্রেক্সিট গণভোটের সময় বরিস জনসনসহ ব্রেক্সিটের পক্ষের প্রচারণাকারীরা পয়েন্ট-নির্ভর যে অভিবাসন ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছিলেন তার পক্ষে তিনি থাকবেন না। এর বদলে তেরেসা অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থার পক্ষে কথা বলবেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে অস্বীকৃতি জানান ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় কাজ করবে না এমন একটি ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনারা তার মুখে শুনেছেন।’ এর মধ্যে সোমবার হাউজ অব কমন্সে ইইউ থেকে বৃটেনের প্রস্থানবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস বলেন, ‘সরকার সব ধরনের বিকল্প খতিয়ে দেখছে। কিন্তু সরল সত্য হলোÑ কোনো সদস্যপদ প্রাপ্তির শর্ত যদি হয় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়া, আমার মনে হয় সেটা খুবই অসম্ভব একটি বিষয়।’
তেরেসা মে’র মন্ত্রিসভায় ইউরোপ নিয়ে তীব্র সংশয়বাদীদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে তার মুখপাত্রের এমন তড়িঘড়ি পাল্টা বক্তব্যের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরে বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স বলেছিলেন, বৃটিশ সরকার ঘনিষ্ট ‘কাস্টমস ইউনিয়নে’র বদলে ইইউয়ের সঙ্গে খুব সম্ভবত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সুবিধা চাইবে। তার ওই বক্তব্যের পরও ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দ্রুত জানানো হয়, যুক্তরাজ্য কোন কৌশলে আলোচনা চালিয়ে যাবে তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |