চট্টগ্রাম : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ইসলামী ছাত্রশিবির ও আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশসহ সব ধরনের জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে জঙ্গি সম্পৃক্ততার জন্য কতটি সংগঠন নিষিদ্ধ হতে পারে এবং এ বিষয়ে অগ্রগতি কত দূর- সে বিষয়ে মন্ত্রী বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সির সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, শামসুল হক, মোজাম্মেল হোসেন, ওমর ফারুক চৌধুরী, ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ, ফখরুল ইমাম ও কামরুন নাহার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, র্যা বের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।
জঙ্গি সম্পৃক্ততার কারণে সরকার বিভিন্ন সময়ে হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ, জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা, শাহাদাত-ই-আল হিকমা, হিযবুত তাহরীর ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করেছে। তবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সম্প্রতি আনসার আল ইসলাম নামে তৎপরতা চালাচ্ছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক রায়ের পর্যবেক্ষণে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এর আলোকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি নথি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। তারপর এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। যদিও আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদ ও সংসদের বাইরে একাধিকবার জামায়াত নিষিদ্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। তবে ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতের রায়ে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে।
সম্প্রতি সারাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল জঙ্গিবাদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কমিটিকে বলেন, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। তারা ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরণ করে জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জঙ্গিবাদ দমনে সারাদেশে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া তারা বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশেষ বাহিনী ও ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রস্তাব করেছে।
বৈঠকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন যাতে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।