জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন স্কুল কলেজের কোন সহপাঠীর মধ্যে যদি হঠাৎ পরিবর্তন দেখা যায়,কথা-বার্তায় পরিবর্তন আসে,হঠাৎ করে মসজিদে গিয়ে নামায পড়ে,তখন শিক্ষার্থীদের প্রশাসনকে সাথে সাথে খবর দিয়ে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলা ‘জঙ্গিবাদ রুখবেই তারুন্য-কর্মসূচি ২০১৬’ এর সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের(চসিক) সহযোগীতায় প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট বিতার্কিক ও উপস্থাপক ডা.আব্দুন নুর তুষার,শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শাফী ও চট্টগ্রাম জেলার প্রাক্তন পিপি এ্যাডভোটেক আবুল হাসেম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন,‘মাদক,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে আমরা কেউ প্রশ্রয় দিবো না। জঙ্গিবাদ শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।তাদের টার্গেট কিন্তু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।যারা জঙ্গি কর্মকান্ডে জড়িত তাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।’
তিনি আরো বলেন,জঙ্গিরা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ইসলামের ক্ষতি করছে। ইসলামকে কলঙ্কিত করছে।আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মকে ইসলাম ও এদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে জানালে জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেশ সেরা বির্তাকিত ও উপস্থাপক ডা.আব্দুন নুর তুষার বলেন,জঙ্গিবাদ আসলে কি তা আমাদের জানতে হবে।জঙ্গিবাদ পৃথিবীতে ছিল, থাকবে।যারা যুদ্ধে পরাজয় হয় তারা জঙ্গিবাদকে বেছে নিয়েছে।মধ্যপ্রাচ্যও জঙ্গিবাদ আক্রমনের স্বীকার হয়েছিল। জঙ্গিদের মুল লক্ষ্য হলো ক্ষমতা দখল করা।
‘কখনো আমাদের ইসলাম বলেনি মানুষকে হত্যা করতে। জঙ্গিবাদকে ইসলাম সমর্থন করেনা।জঙ্গিরা অতি ক্ষুদ্র যারা গায়ের জোরে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মহানবী (সঃ) গায়ের জোরে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেনি। মোহাম্মদ (সঃ) অন্তরে ও মুখের ভাষা দিয়ে ধর্ম প্রচার করেছে’।
তিনি আরো বলেন,ডিগ্রি ও শিক্ষা এক জিনিস না।এদেশে অনেকে বিদেশি ভাষা চর্চা করে।আরবী ভাষা চর্চা করে কিন্তু ইসলামের জ্ঞান চর্চা করেনা।যার কারনে তাদের মধ্যে একটি শূন্যতা থেকেই যায়।
শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শাফী বলেন,আজ তারুণ্যের বিজয়।আমাদের সময় শেষ হয়ে গেছে।তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন,তোমাদের মতো তরুণদের দেখলে মনে আশা জাগে।আজ চট্টগ্রামের মানুষ খুশি যে কুখ্যাত রাজাকার আল বদর বাহিনীর চট্টগ্রামের প্রধান মীর কাশের আলীর ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়েছে। সে এবং তার সহযোগী ডালিম হোটেলে জসিম সহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে কর্ণফুলি নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন,জঙ্গিদের স্থান জান্নাতে যেমন হবে না তেমন জাহান্নামেও হবেনা। তাদের লাশ কুকুরকে দিলে কুকুরও খাবে না। জঙ্গিদের লাশ ঢাকা মর্গে পড়ে আছে নেওয়ার কেউ নেই, পরিবারও অস্বীকার করে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন,‘তোমাদের কোন সহপাঠির আচরনে যদি হঠাৎ পরির্বতন কিংবা ল্যাপটপে বা ট্যাবে কোন কিছু দেখে পিতা মাতার সাথে ঝগড়া করে, তাহলে সাথে সাথে প্রশাসনকে জানাবে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
সভায় নগরীর ৩৩টি স্কুলের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী,শিক্ষক ও অভিভাবকদের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জঙ্গিবাদ রুখতে শপথ বাক্য পাঠ করান।