ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পাঁচ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাণিজ্যের অভিযোগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে । গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চালানো অভিযানে তার সঙ্গে ধরা পড়েছেন সহযোগী ফয়সাল হোসেনও। খবর বিডিনিউজের।
গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ডিজিটাইজেশন ও কম্পিউটারাইজেশনের দায়িত্বে থাকা শামসুজ্জামান বোর্ডের সিস্টেম কোড ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাণিজ্য করে আসছিলেন।
দেশের সব কারিগরি বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, রোল নম্বর, সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি, সেগুলোকে নির্দিষ্ট সার্ভারে আপলোড দেওয়া, ভেরিফিকেশন করা, কম্পিউটার সিস্টেম কোড সংরক্ষণ– গোপনীয়তা বজায় রাখার দায়িত্বে ছিলেন শামসুজ্জামান। উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘শামসুজ্জামান তার অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনের চেয়ে দুর্নীতিমূলক কাজ করার জন্যই বেশি আগ্রহী ছিলেন। সিস্টেম অ্যানালিস্ট হওয়ার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবছর কতজন এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, কতজন ফর্ম ফিলআপ করে রোল নম্বর পেয়েছে, কতজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নাই, কতজন কৃতকার্য হয়েছে, কতজন অকৃতকার্য হয়েছে– সব তথ্যই তার কাছে থাকতো।’
ডিবি কর্মকর্তা মশিউর বলেন, ‘এ বিশাল তথ্য ভাণ্ডারের তথ্য জানা শামসুজ্জামান অফিসের কিছু লোক এবং বাইরের বিভিন্ন বিভাগের কিছু দালালকে দিয়ে এই মার্কশিট ও সার্টিফিকেটের এই বাণিজ্য করে আসছিলেন। দালালরা কখনো কখনো ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘অনলাইনে ভেরিফাইড হওয়া অরজিনাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট পেতে হলে যোগাযোগ করুন’ বলে বিজ্ঞাপনও দিতো।’
২০১৭ সালে একই অভিযোগে শামসুজ্জামান একবার গ্রেপ্তার হয়ে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর বলেন, ‘হাই কোর্টের মাধ্যমে আবার চাকরিতে পুনর্বাহল হলে আবারও একই ব্যবসা শুরু করেন।’ এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনে করেন, শামসুজ্জামানের একার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। তার সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত থাকতে পারে।