দখলদার ইসরাইলী বাহিনী আগ থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। তখন গাজায় ত্রাণ সামগ্রী নেয়া সম্ভব হত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হামাসের সঙ্গে সংঘাতের পর থেকে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর সব পথ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল। একদিকে তীব্র বিমান থেকে বোমা হামলা অন্য দিকে খাদ্য সংকটে গাজায় দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গ্রেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বোমাবর্ষণে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিচ্ছে।
অনাহার ও অসুস্থতা গাজার অধিবাসীদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। মারা যেতে পারে লাখ লাখ মানুষ। তাৎক্ষণিক ও সমন্বিত পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি এই দুর্ভিক্ষ এড়াতে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ তরান্বিত করাসহ গাজায় স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান ব্যবস্থাকে রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে, গাজা উপত্যকার উত্তর অংশে গাজা সিটি এবং শাতি ও জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলায় আবাসিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া গাজা শহরের আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের আশপাশের এলাকাগুলোতে কামানের গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার হাতে আসা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরে দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে এবং পরে তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দেয়। উপকূল ধরে হেঁটে যাবার সময় একজন ফিলিস্তিনিকে সাদা কাপড় নাড়তেও দেখা যায় ভিডিওটিতে।
গাজায় আকাশ থেকে ফেলা সাহায্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া সাগর থেকে আরও ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছে। ৮ অক্টোবরের পর হেজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষে এটিই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির সংখ্যা।
অন্যদিকে, গাজায় দক্ষিণাঞ্চরের রাফাহ শহরে স্থল অভিযান শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েল মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে নতুন সূচি নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আলোচনা বাতিল করে দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে এই নতুন প্রস্তাবটি পাওয়া গেল।
ওদিকে, গতকাল বুধবার রাতে চতুর্থ দিনের মতো গাজায় ইসরায়েলের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের প্রতিবাদে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে শত শত বিক্ষোভকারী অবস্থান বজায় রেখেছে। বিক্ষোভকারীরা এ সময় গাজার অধিবাসীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়ায়। বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে জর্ডানকে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানায়।