রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।
মীর কাসেম এখন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন। ওই কারাগারের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মীর কাসেম আলী মার্সি পিটিশন করবেন না বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে।’
জামায়াত নেতার ফাঁসি কি তাহলে আজই কার্যকর হচ্ছে?-জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ফাঁসির বিষয়ে আমাদের সব প্রস্তুতি আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।’
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ফাঁসি কার্যকরের আগে মীর কাসেম আলীর পরিবার আরও একবার কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। তারা দেখা করতে আসাই দণ্ড কার্যকরের বিষয়ে একটি ইঙ্গিত পাবেন আপনারা।’
জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় রিভিউয়ের আবেদন গত মঙ্গলবার খারিজ হয়ে যাওয়ার পরদিন মীর কাসেমকে এই রায় আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা পাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দুই দিন ধরে প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ আদালত কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে পারেন। রাষ্ট্রপতি তাকে প্রাণদণ্ড মওকুফ করে অন্য যে কোনো সাজা বা মুক্তি দিতে পারেন।
মীর কাসেম প্রাণভিক্ষা না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তার দণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইন প্রক্রিয়া বাকি রইলো না। এখন রাষ্ট্রপক্ষ যে কোনো দিন ফাঁসির রায় কার্যকর কতে পারবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আইন অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ পেলেও তিনি কত দিনের মধ্যে এই আবেদন করতে পারবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত বুধবারই জানিয়েছিলেন, আসামিকে যুক্তিসঙ্গত সময় দেয়া যায়। আর এই সময় সাত দিনের বেশি হওয়া উচিত নয়।
রিভিউয়ের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর বুধবার কাশিমপুর কারাগারে বন্দি মীর কাসেমকে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চায় কারা কর্তৃপক্ষ। সেদিন তিনি আরও সময় নেয়ার কথা জানান। তবে ওই দিন বিকালে কারাগারে দেখা করে এসে মীর কাসেমের স্বজনরা জানান, নিখোঁজ ছেলে ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন না।
মীর কাসেমের স্ত্রীর অভিযোগ, গত ১০ আগস্ট তার ছেলে আহমাদ বিন কাসেমকে ধরে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, তারা তাকে ধরেননি। কাসেমপুত্র পালিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার মীর কাসেমকে আবারও প্রাণদণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলে কারা কর্তৃপক্ষ। তখন তিনি আবারও সময় নেয়ার কথা বলেন।