জয়লাভ করেছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন চীনবিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) । শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডিপিপির প্রার্থী উইলিয়াম লাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম চীনবিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত। তাকে ভোট না দেয়ার জন্য নাগরিকদের আহ্বান করেছিল তাইওয়ানকে নিজেদের অঞ্চল দাবী করা চীন।
এর আগে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) প্রার্থী লাই চিংতে জয়ী হয়েছেন। তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে আসছে ডিপিপি। শনিবার দেশটিতে আট ঘণ্টার ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে চীনের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে তাইওয়ানের এ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডিপিপির ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিংতে। তিনি সেখানে উইলিয়াম লাই নামেও পরিচিত। খবর : রয়টার্স।
স্থানীয় প্রচার মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ১ কোটি ৯৫ লাখের বেশি ভোটার রয়েছেন তাইওয়ানে। এর মধ্যে ৫০ লাখের বেশি ভোট পেয়েছেন লাই। শনিবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর আট ঘণ্টা ভোট দেন ভোটাররা। এরপর ফল ঘোষণা শুরু হয়। প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন লাই।
সংবাদমাধ্যমটিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রভাব বিবেচনায় এবারের তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। এ নির্বাচনকে যুদ্ধ ও শান্তির মধ্যে বিকল্প বেছে নেওয়া বলে মনে করছে চীন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ ভোটে তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এর পর থেকে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ধরে রেখেছে তাইওয়ান।
এদিকে নির্বাচনে জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় লাই বলেন, ‘চীনের ক্রমাগত হুমকি এবং ভীতি থেকে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি তাইওয়ান প্রণালীতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রে একটি নতুন অধ্যায় লেখার জন্য আমি তাইওয়ানের জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা বিশ্বকে দেখিয়েছি যে আমরা গণতন্ত্রকে কতটা লালন করি। এটি আমাদের অটল অঙ্গীকার।’
ভোটের আগে লাইকে বারবার ‘বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে উল্লেখ করেছে বেইজিং। সেই সঙ্গে তার দেওয়া আলোচনার প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে চীনা প্রশাসন। এরপরও তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি বজায় রাখা ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লাই। এবারের নির্বাচনে লাইয়ের অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল কুয়োমিনতাং (কেএমটি) পার্টির হো ইয়ু ইহ এবং ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) নেতা কো ওয়েন-জে। রাজধানী তাইপের সাবেক মেয়র কো ওয়েন-জে।
ভোটের আগে সাংবাদিকদের লাই বলেন, প্রতিটি ভোটই মূল্যবান।
তাইওয়ানের কষ্টার্জিত গণতন্ত্রের জন্য এসব ভোটের গুরুত্ব রয়েছে। এ সময় তাইওয়ানের সব ভোটারকে ভোট দিতে আহ্বান জানান তিনি। এবারের নির্বাচন দেখিয়েছে, চীনের দেওয়া চাপ ভোটারদের মধ্যে কাজ করেনি। নির্বাচনের ফল ঘোষণা শুরুর পর কেএমটি ও টিপিপি পরাজয় মেনে নেয়।