হতাহত ছাড়াও রেলওয়ের আনুমানিক আড়াই কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায়। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের শিকল টানলেও তাতে কাজ করেনি। এ ঘটনায় পরদিন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এসএম নুরুল ইসলাম (৫৭) বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৫ জানুয়ারি দুপুর ১টার সময় ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে। ট্রেনটি রাত আনুমানিক ৯টার সময় ট্রেনটি সায়েদাবাদ এলাকা পৌঁছানো মাত্র ট্রেনের ৭৯৩৭ নম্বর কোচের বগি ‘চ’ তে ধোঁয়া দেখে চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। তখন ওই বগিতে ডিউটিতে থাকা মোহাম্মদ আলী আগুন আগুন বলে চিৎকার করে যাত্রীদের সতর্ক হতে বলে এবং টেনের শিকল টেনে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় আমি (বাদী) ভ্যাকুয়াম প্রেস করে ট্রেনটি থামানো হয়। রাত আনুমানিক ৯টা ২ মিনিটের দিকে গোপীবাগ ও গোলাপবাগের মাঝামাঝি জামে মসজিদের সামনে ট্রেনটি থামে। ততক্ষণে আগুন দাউ দাউ করে ‘চ’ বগি থেকে ‘ছ’ বগিতে এবং ‘পাওয়ার কার নম্বর ৭৫২৬ ‘ভ’ বগিতে ছড়িয়ে পড়ে।
এজাহারে আরও বলা হয়, অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে নাশকতা করে যাত্রীদের হত্যা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে দাহ্য পদার্থ দ্বারা ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা রেলওয়ে থানার গোপীবাগ ও গোলাপবাগের মাঝামাঝি গোলাপবাগ জামে মসজিদের সামনে গোপীবাগ রেলক্রসিং হতে অনুমানিক ১৫০ গজ দক্ষিণে বেনাপোল এক্সপ্রেসের ‘চ’, ‘ছ’ ও ‘ভ’ বগিতে এ ঘটনা ঘটায়। ট্রেনের চারজন যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া অনেকে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রেলওয়ের অনুমানিক দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় মৃত চারজনের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস। গত রোববার (৭ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করলে তা আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই আগুনে পুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন চারজন যাত্রী।