বেশ কয়েকজন আলোচিত প্রার্থী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে গেছেন । এই প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবদুল কাদের সিদ্দিকী, বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার উল্লেখযোগ্য।
রোববার নির্বাচনের পর এসব প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়। পরাজিত প্রার্থীদের বেশিরভাগই এখনো কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর দলের বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সমর্থিত ৬ প্রার্থীর মধ্যে দুই জন নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন (বরিশাল-২) ও জাসদের রেজাউল করিম তানসেন (বগুড়া-৪)। হেরে যাওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা।
পিরোজপুর-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে হেরে গেছেন সাত বারের এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। রোববার রাতে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন সঠিক হয়েছে।’
কুষ্টিয়া-২ আসনে ১৪ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন হাসানুল হক ইনু। জাসদের এই সভাপতি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। হেরে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমাদের দল থেকে বগুড়া-৪ আসনে রেজাউল করিম তানসেন জিতেছেন। নির্বাচন নিয়ে আমি এখন কী বলব, সারাদেশের ফলাফল আসুক। সবকিছু মূল্যায়ন করার পর কথা বলব।’
জাসদের কেন্দ্রীয় একজন নেতার দাবি, কুষ্টিয়া-২ আসনে প্রার্থিতা ১৪ দলীয় জোটের হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ হাসানুল হক ইনুর পক্ষে কাজ করেনি। এ কারণে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেখানে বিজয়ী হয়েছেন। ২৩ হাজার ৩৫৪ ভোটে হেরে গেছেন হাসানুল হক ইনু।
নির্বাচনে হেরে মুষড়ে পড়েছেন তৃণমূল বিএনপির শীর্ষ নেতারা। দলের চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ আসনে এবং মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে সোনালি আঁশ মার্কায় প্রার্থিতা করে হেরেছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে দলের চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রার্থীই জিতেনি। আর নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলব না। আমাদের যারা প্রার্থিতা করেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে দলের অবস্থান জানাব।’
দলের মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারের মন্তব্য, ‘আমার শরীরটা সুস্থ হলে চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে আলাপ করে আমি কথা বলব। নির্বাচন বয়কট করে লাভ নেই। বয়কটে কোনো উপকার নেই।’
মুন্সীগঞ্জ থেকে নির্বাচন করে হেরে গেছেন বিকল্পধারার বর্তমান এমপি মাহী বি. চৌধুরী। তাকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়ের কাছে। অনুপম শাহজাহান ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রার্থী কাদের সিদ্দিকী গামছা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট। রংপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামানের কাছে হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা)।