আসাম ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য আসামের সবচেয়ে বড় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফার) সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে। শুক্রবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি করেন। এর মাধ্যমে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চিরাবসান ঘটতে যাচ্ছে।
ভারতের উত্তরা-পূর্বাঞ্চলের বিছিন্নতাবাদী এ গোষ্ঠী দীর্ঘদিন দেশটির সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। তবে উলফার একাংশের নেতা পরেশ বড়ুয়া এই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন।
এই শান্তি চুক্তির মাধ্যমে আসামে অবৈধ অভিবাসন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের জায়গা-জমির অধিকার এবং প্রদেশটির উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উলফার সব ন্যায্য দাবি-দাওয়া মেনে নেবেন তারা। এছাড়া উলফা একটি সংগঠন হিসেবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
তিনি জানান, আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য থেকে বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি প্রমাণ করে এই অঞ্চলটিতে বিদ্রোহ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে চলে এসেছে।
আসাম সরকারের হয়ে ত্রিপক্ষীয় এ চুক্তিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানিয়েছেন এ চুক্তির মাধ্যমে আসামে বিদ্রোহ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে আসামের শিবসাগরে উলফার জন্ম হয়। প্রদেশটির আদিবাসীদের নিয়ে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য নিয়ে উলফা তাদের যাত্রা শুরু করে। ১৯৮০ সালের শেষ দিক থেকে উলফা ভারতের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ শুরু করে।
প্রথমে গরিব ও দুঃখিদের সহায়তার জন্য উলফা প্রতিষ্ঠা হলেও সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর কৌশল পরিবর্তন হয়ে যায় এবং এটি সম্পূর্ণভাবে ভারত সরকারবিরোধী হয়ে ওঠে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শক্তি হারায় উলফা।
সূত্র: এনডিটিভি