১৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ।এতে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের শিক্ষা-গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পথচলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবদুল মান্নান।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জনাব আবদুল মান্নান বলেন, শিক্ষার্থীদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে তৈরি করার জন্য চুয়েট রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিয়েছে। ভালো বীজ আছে, সার আছে কিন্তু যে জমিতে ফসল ফলানো হবে সেটাকে যদি ভালোভাবে কর্ষণ করা না হয় তাহলে ভালো ফসল পাওয়া যাবে না। চুয়েটের ব্যাপারেও তেমন কথা প্রযোজ্য। এখানে আরো আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে বিশ্বমানের হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চুয়েটের অবকাঠামোগত ও আরো উন্নয়ন প্রয়োজন। এজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশ এক সময় এমন ছিল না। গরীব ছিলাম আমরা। আমাদের অধিকাংশ মানুষ এক সময় পরার জন্য পোশাক পেতেন না। এখন সেদেশের মানুষ সারা বিশ্বকে পোশাক পরাচ্ছেন। এসব হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জিত মহান স্বাধীনতার ফসল। ভুখা-নাঙ্গা মানুষ জীবন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন। আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আরো অনেকদূর এগিয়ে যাব। আমাদেরকে সব প্রেরণা ও শক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, জীব ও জন্তু নিজের জন্য বাঁচে। মানুষ বাঁচে অন্যের জন্য। যে মানুষ নিজের জন্য বাঁচতে চায় সে মানুষ নয়, জন্তু। আমাদেরকে সুষ্টি-¯্রষ্টা-সুন্দর-কল্যাণ ও মুক্তির জন্য বাঁচতে হবে। এভবে দেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য গড়তে হবে। শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়তে হবে। সকলকে মিলে-মিশে কর্মে-মর্মে-আচরণে-ধর্মে চুয়েট ক্যাম্পাসটাকে সব সময় সুন্দর রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, সেশনজটমুক্ত, অস্থিরতামুক্ত একটি সুন্দর সুখী পরিবার হিসেবে চুয়েট এগিয়ে যাচ্ছে। সীমিত বাজেটের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা-গবেষণায় চুয়েট নানা সাফল্য লাভ করে দেশে-বিদেশে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে, প্রতিবছর সফলভাবে একাধিক আর্ন্তজাতিক কনফারেন্স-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠান, বিভিন্ন খ্যাতনামা জার্নালে নিয়মিত গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ, বিশ্বমানের ল্যাব যন্ত্রপাতি সংযোজন, রোবট গবেষণায় যুগান্তকারী উদ্ভাবন, সরকারের রূপকল্প অনুসরণে ভিশন ২০২১ গ্রহন ও ভিশন ২০৪১ গ্রণয়নের উদ্যোগ প্রভৃতি কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এছাড়া চুয়েট এলামনাইসহ অন্যান্য শুভাকাঙ্খী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বন্ধন আরো দৃঢ় হয়েছে। উচ্চমানসম্পন্ন প্রকৌশল শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।এর মধ্যে ছিল- রক্তদান, বৃক্ষরোপন, আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ প্রভৃতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো: হযরত আলী, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আশুতোষ সাহা, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুল আলম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীনঅধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো: মোস্তফা কামাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (অতি:দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী।