নেতানিয়াহু সরকার অবশেষে দখলদার ইসরাইলী বাহিনীর ৫০১ সেনা নিহত ও অসংখ্য আহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে । এবারের যুদ্ধের মত এমন ভয়াবহতার নজির কম। এমন ঘটনায় ইহুদীরা ভয়ে ইসরাইলী নামক দখল করা রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাচ্ছে। আর বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তারা তার পদত্যাগ দাবি করে আসছে। কিন্তু যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহু যুদ্ধ থেকে সরে আসছে না। প্রতিদিন অবরুদ্ধ গাজায় হামলা করে যাচ্ছে।
এদিকে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রায় ৫০১ জন সৈন্য নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে ইসরাইলি মিডিয়া জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে তাদের প্রায় ৫০১ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।
এই ৫০১ সৈন্য ছাড়াও ইসরাইলি পুলিশ বাহিনীর ৫৭ জন অফিসার এবং সদস্যও নিহত হয়েছে। আর নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের প্রায় ১০ সৈন্য নিহত হয়েছে।
তবে বেশির ভাগ সৈন্য নিহত হয়েছে ৭ অক্টোবর। ওই দিনই হামাসের হামলায় ৩০০-এর বেশি সৈন্য নিহত হয় বলে আইডিএফ তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে। আর গত ৮২ দিন ধরে চলা গাজার যুদ্ধে এই সংখ্যাটি ক্রমাগত বেড়েছে।
হামাস ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালানোর সময় সীমান্তবর্তী ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্রবেশ করে সৈন্যদের ব্যাপকভাবে হত্যঅ করে। আর যেসব সৈন্য পালাতে গিয়ে লাফিয়ে পড়েছিল, তারা আহত হয়।
আবার হামাসের সাথে মুখোমুখি লড়াইতেও অনেক সৈন্য নিহত হয়েছে।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ২৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। ওই দিন ইসরাইলের বিশেষ ইউনিটগুলো গাজা উপত্যকায় প্রবেশ শুরু করে। ওই অভিযানের প্রথম সপ্তাহেই ইসরাইলি বাহিনী ২১ জন সদস্যকে হারায়। গাজায় ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে কঠিন দিন ছিল ১ নভেম্বর। ওই দিন তারা ১৫ জন সৈন্য হারায়। এদের মধ্যে ১১ জন ছিল গিভাতির সাবর ব্যাটালিয়নের। অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় তারা নিহত হয়েছিল।
ইসরাইলি সৈন্যদের জন্য আরেকটি ভয়াবহ দিন ছিল ১৮ নভেম্বর। ওই দিন উত্তর গাজার বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধে ১০ জন নিহত হয়। ১২ ডিসেম্বরও ছিল কালো দিন। ওই দিনও ১০ জন নিহত হয়। তাদের ৯ জনই নিহত হয়েছে শেজাইয়ার যুদ্ধে। আর ২৩ ডিসেম্বর নিহত হয়েছিল আরো ৯ সৈন্য।
এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সপ্তাহে কোনো ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়নি। ওই সপ্তাহটি ছিল যুদ্ধবিরতির সময়। তখন প্রায় ১২০ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।
যুদ্ধে গোলানি ব্রিগেড ৮২ জন অফিসার ও সৈন্য হারিয়েছে। আর গিভাতি ব্রিগেড হারিয়েছে ৩২ জনকে, নাহান ব্রিগেড হারিয়েছে ৩১ সৈন্য। এছাড়া ২৫ জন প্যারাট্রপারও নিহত হয়েছে। আর কমান্ডো ব্রিগেড হারিয়েছে ২৬ জন্য সৈন্য। সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট