বে–টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে যৌথ উদ্যোগে এই টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ (এডি পোর্টস) এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব দাখিল করেছে। বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে চায়। পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনার জন্য সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান আরো বলেন, বে–টার্মিনালেও অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বে–টার্মিনালের কন্টেনার টার্মিনাল–১ ও ২ নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য যথাক্রমে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আগামী ২০২৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য বে–টার্মিনালের ৪র্থ টার্মিনাল হিসেবে গ্যাস ও অয়েল টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই টার্মিনাল নির্মাণের জন্য একটি দেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ ব্যক্ত করে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। এসব বিনিয়োগের মাধ্যমে টুল পোর্ট পদ্ধতির পরিবর্তে ল্যান্ডলর্ড পোর্ট মডেলে পরিণত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।
রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, লালদিয়া কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ডেনমার্কে বিশ্ব বিখ্যাত টার্মিনাল অপারেটর এপিএম টার্মিনাল প্রস্তাব দিয়েছে। যা বর্তমানে পিপিপি প্রকল্প হিসেবে প্রক্রিয়াধীন। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ–ডেনমার্ক যৌথ প্ল্যাটফর্ম সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। এ টার্মিনাল নির্মাণের কাজও আগামী বছর শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ শুরু হবে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ইউক্রেন–রাশিয়ার পর এখন ফিলিস্তিন–ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বিশ্ব এক ধরনের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই অস্থিরতা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। যে কারণে অর্থনীতিতে এক ধরনের মন্দা চলছে। এর মধ্যেও আমি আপনাদের সুসংবাদ দিতে চাই ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর যেই পরিমাণ আমদানি–রপ্তানির কার্গো হ্যান্ডলিং করেছে এটি আশাজনক। অনেকেই বলেছিল হয়তো এবার চট্টগ্রাম বন্দর ৩ মিলিয়ন ক্লাব থেকে ছিটকে পড়বে। অনেকে আশঙ্কা করেছিল হয়তো থাকতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি, ইতোমধ্যে আমরা ৩ মিলিয়ন কন্টেনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হয়েছি। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর ৩০ লাখ ৪ হাজার ৫০৫ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। একই সময়ে এবার কার্গো হ্যান্ডলিংও অনেক বেড়েছে। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি ইংরেজি বর্ষে আমরা ১১ কোটি ৮৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৭৬ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করেছি, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।