দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে অবরুদ্ধ গাজায় । একের পর নির্মম হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। তারা হত্যার সঙ্গে সঙ্গে বর্বর নির্যাতনও চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে গাজা উপত্যকায় বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে নগ্ন করে, চোখ বাঁধা অবস্থায় প্রদর্শন করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় আটক লোকদের পরনে ছিল কেবল আন্ডারওয়্যার। পরে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঠিক কখন এবং কোথায় ঘটনাটি ঘটে, তা জানা যায়নি। তবে এ ঘটনার একটি ভিডিও গাজার সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সিএনএন জানিয়েছে, বেশ কয়েক ব্যক্তি আটক এসব লোকের কয়েকজনকে চিনেছেন। তারা দাবি করেছেন, এসব লোক তাদের সহকর্মী বা পরিবার সদস্য। তারা হামাসের সাথে কোনোভাবেই জড়িত নন।
ইউরো-মেডিটেরানিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, ‘ইসরাইলি সেনাবাহিনী কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোককে আটক এবং ভয়াবহভাবে নির্যাতিত করেছে।’
এতে বলা হয়, ‘ইউরো-মেড মনিটর তথ্য পেয়েছে যে ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচার এবং খেয়ালখুশিমতো চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং প্রবীণ বাস্তুচ্যুতদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি অভিযান চালাচ্ছে।’
এ ব্যাপারে মন্তব্য করার জন্য সিএনএনের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। সিএনএন কয়েকটি ছবির স্থান গাজা সিটির উত্তরের বেইত লাহিয়া বলে শনাক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আল-আরাবি আল-জাদিদ জানায়, তাদের এক সাংবাদিক এবং তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য আটক এসব ব্যক্তির মধ্যে ছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, আজ বৃহস্পতিবার ইসরাইলি দখলদার বাহিনী ওই সাংবাদিক এবং গাজার দি নিউ আরব অফিসের পরিচালককে আটক করে। আমাদের সহকর্মী দিয়া আল-কাহলতকে বেইল তাহিয়ার মার্কেট স্ট্রিট থেকে আটক করা হয়। তার সাথে তার কয়েকজন ভাই, স্বজন এবং অন্যান্য বেসামরিক লোককে গ্রেফতার করা হয়।
পত্রিকাটি তাদের বিবৃতিতে জানায়, দখলদাররা ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার লোকদের তাদের পোশাক খুলেছে, তাদেরকে অপমানিত করেছে। পরে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। ইসরাইলি সৈন্যরা অপরাধমূলক এবং লজ্জাজনকভাবে অনেক গাজাবাসীকে গ্রেফতার করছে।
সামাজিক মাধ্যমে ইসাম আবদাল্লাহর পোস্ট করা একটি ছবিতে আল-কাহলত নামের ওই সাংবাদিককে দেখা যায়।
আল-আরাবি আল-জাদিদের এডিটর-ইন-চিফ হুসাম কানাফানি এক বিবৃতিতে বলেন, আল-কাহলত এবং তার পরিবার এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় তাদের সন্ধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
সিএনএন আটক অপর ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এক স্বজন হানি আল-মাদুনের সাথে কথা বলে।
হানি বলেন, ‘ইসরাইলি বানিহী সেখানে গিয়ে সকল পুরুষকে নেমে আসতে বললে তারা নেমে আসেন। তাদের দুটি বাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, গাজায় তিনি তার বোনের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক তার ওই স্বজনের নাম আবুদ। এছাড়া ভিডিওতে মাহমুদ নামের একজনকে শনাক্ত করেন তিনি। তিনি জানান, মাহমুদ ছিলেন দোকানদার। আর আবুদ কোনো কাজের সাথে জড়িত নন। তিনি তার বাবাকে নির্মাণকাজে সহায়তা করেন। সূত্র : সিএনএন, মিডল ইস্ট মনিটর এবং অন্যান্য