এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের যে বিধান রয়েছে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে, সেটি পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন নেত্রকোণা–৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন। ভোটারদের সমর্থনমূলক এই স্বাক্ষর তালিকায় গরমিলের অভিযোগেই তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তাতে খানিকটা ক্ষুব্ধ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট থেকে দূরে রাখার কৌশলের অংশ এই বিধান। এটা পরিবর্তন করা উচিত। খবর বিডিনিউজের।

প্রার্থিতা বাতিল করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বুধবার নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন অধ্যাপক আনোয়ার। তিনি বলেন, আমার মত একজন মানুষের ১ শতাংশ ভোটার সমর্থন না থাকার অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এটা গুরুতর বিষয়। তখন আমার কাছে মনে হয়েছে, এমন পদ্ধতি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এটা একটা কৌশল। এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন না থাকার যে অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তখন সাধারণ মানুষ বলছে, ষড়যন্ত্র করে একজন ভালো মানুষের মনোনয়ন বাতিল করছে। আমি মনে করি, এই আইনটা পরিবর্তন হওয়া উচিত। কেউ যদি না করেন তাহলে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে কাজ করব।

২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির বর্জনের মধ্যে অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। আসছে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও বিএনপি বর্জন করছে। সে কারণে ২০১৪ সালের পুনরাবৃত্তি এড়াতে আসনে আসনে ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে। তাতে দলের মনোনয়ন যারা পাননি, তারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উৎসাহের সঙ্গে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। এই তালিকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে কয়েকজন ভোটারের স্বাক্ষর যাচাই করছে নির্বাচন কমিশন। সেখানে অসত্য তথ্য কিংবা গরমিল থাকলে প্রার্থীতা বাতিল করছে ইসি।

আনোয়ার হোসেন বলেন, যখন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাটি (স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করানোর) ছিল, তখন নির্বাচনটা জমে গিয়েছিল। মানুষজন ব্যাপকভাবে আন্দোলিত। কিন্তু সেখানে যখন এটা (মনোনয়ন) বাতিল হয়ে যায়, তখনই একটা নিরবতা নেমে এসেছে। তারা বলছে যায়েন না, আর যাইতাম না, মানুষের কথা আর যাইতাম না, ভোট? কিয়ের ভোট। এই কথাগুলো বলছে।

নেত্রকোণা–৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল। তার বদলে এবার এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনকে। বেলাল পূর্বধলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এবং আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করা আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। ২০১২–২০১৪ সময়ে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। তারা দুজন প্রয়াত কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031