জাতীয় পার্টির (জাপা) এবার চট্টগ্রামে প্রার্থী সংখ্যা বাড়ছে । ২০১৮ সালেন ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে মাত্র ৬ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল দলটি। তবে আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৫ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে ৫ আসনে পুরনো প্রার্থী বহাল রাখা হয়েছে। একটি আসনে বাদ পড়েছেন গতবারের প্রার্থী।
জাপা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের ৩০০ আসনের জন্য ১ হাজার ৭৫২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী জাপা থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এরমধ্যে চট্টগ্রামের ১৬ আসন থেকে কিনেছেন ২৯ জন। গত রোববার চট্টগ্রামের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সর্বশেষ গতকাল বিকেলে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সারা দেশের ২৮৯ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ আসনও রয়েছে।
এদিকে সারা দেশে দলীয় মনোননয়ন না দেয়া ১১ আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর–পতেঙ্গা) আসনটিও রয়েছে। জাপা’র ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আসনটিতে সংসদের বিরোধী দলের নেত্রী ও জাপা’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এর পছন্দের প্রার্থীকে শেষ মুহূর্তে দলের মনোনয়ন দেয়া হতে পারে।
কোন আসনে কারা : চট্টগ্রাম–১ (মীরসরাই উপজেলা) আসনে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সদস্য সচিব মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন চৌধুরী, চট্টগ্রাম–২ (ফটিকছড়ি উপজেলা) আসনে মো. শফিউল আজম চৌধুরী, চট্টগ্রাম–৩ (সন্দ্বীপ উপজেলা) আসনে জাতীয় পার্টি সন্দ্বীপ উপজেলা সভাপতি ও হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ ছালাম। তিনি জাতীয় পার্টি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যও।
এছাড়া চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস–চেয়ারম্যান মো. দিদারুল কবির, চট্টগ্রাম–৫ (হাটহাজারী উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম–৬ (রাউজান উপজেলা) আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. সফিক উল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম–৭ (রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর–খরনদ্বীপ ইউনিয়ন) আসনে জাতীয় যুব সংহতি চট্টগ্রাম উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মুসা আহমেদ রানা, চট্টগ্রাম–৮ (শ্রীপুর–খরনদ্বীপ ইউনিয়ন ব্যতীত বোয়ালখালী উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩,৪,৫,৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড) সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম–৯ (কোতোয়ালী ও বাকলিয়া থানা) আসনে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য মাসুদা এম রশীদ এর ছেলে ও জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সানজিদ রশীদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম–১০(পাহাড়তলী–ডবলমুরিং) আসনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাছির উদ্দিন ছিদ্দিকী, চট্টগ্রাম–১২ (পটিয়া উপজেলা) আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মো. নুরুচ্ছফা সরকার, চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রব চৌধুরী, চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ উপজেলা ও সাতকানিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন) আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাফর মো. ওলিউল্লাহ, চট্টগ্রাম–১৫ (লোহাগাড়া ও ৬টি ইউনিয়ন ব্যতীত সাতকানিয়া উপজেলা) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক মো. ছালেম এবং চট্টগ্রাম –১৬ (বাঁশখালী উপজেলা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
বহাল যারা : এবার মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মো. দিদারুল কবির, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মো. নুরুচ্ছফা সরকার, আবু জাফর মো. ওলিউল্লাহ একাদশ সংসদ নির্বাচনেও জাপার প্রার্থী হয়েছিলেন। এছাড়া গতবার চট্টগ্রাম–২ (ফটিকছড়ি উপজেলা) আসনে জহুরুল ইসলাম ছিলেন জাপা’র প্রার্থী। এবার তিনি বাদ পড়েছেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে অনেকদিন ধরে নেতৃত্ব শূন্য দেখা যাচ্ছে। এ শূন্যতা পূরণে জনগনের ম্যান্ডেটের জন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। চট্টগ্রামের অনেক সমস্যা রয়েছে যেগুলো জাতীয়ভাবে আলোচনা হওয়া দরকার, কিন্তু হচ্ছে না। চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকার টাকা দিচ্ছে। কিন্তু গণমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা হচ্ছে না। গণমুখী পরিকল্পনার জন্য জাতীয় সংসদে গিয়ে কথা বলা দরকার, এগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে মনে করছি। তিনি বলেন, সরকার উন্নয়ন করলেও বাঁশখালীর যে সমস্যা এবং যে খাতে উন্নয়ন করা দরকার তা সরকারের কাছে সেভাবে তুলে ধরতে পারেনি। সে জায়গা থেকে বাঁশখালীবাসীর দাবি এবং তাদের আবদার পূরণে নির্বাচনে আসছি।
তিন পার্বত্য জেলা : খাগড়াছড়িতে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠকে দলের মনোনয়ন দিয়েছে জাপা। এছড়া রাঙামাটিতে হারুনুর রশীদ মাতুব্বর এবং বান্দরবানে এটি এম শহীদুল ইসলামকে মনোনয়ন দেয়া হয়।