পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটের ভাটা বান্দরবানের রুমায় । প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র ছাড়াই সাঙ্গু নদীর পাড়ে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বনাঞ্চল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে স্কেভেটর দিয়ে ইতিমধ্যে পাহাড় কেটে বিরাট জায়গা সমান করে ফেলা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার রুমা উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরের পলিকা পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবৈধ ইটের ভাটা তৈরির জন্য স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে মাটিগুলো ডাম্পার ট্রাকে করে একপাশে জমিয়ে রাখা হচ্ছে ইট তৈরির জন্য। ইট পোড়ানোর জন্য ইটের ভাটার পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রাম চিমনি স্থাপনের কাজ করছে শ্রমিকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দার সাথোয়াই মারমা, চনুমং অভিযোগ করে বলেন, ইটের ভাটা তৈরির জন্য কয়েকমাস ধরেই স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ছোটবড় পাহাড় কেটে বিশাল জায়গা সমান করে ফেলা হয়েছে। শোনেছি বনাঞ্চল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতির কাছাকাছি ইটের ভাটা করার নিয়ম নেই, তাহলে পরিবেশ নষ্ট করে এই ইটভাটা কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও পাহাড়িদের গ্রামের পাশেই গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা। নতুন এই ইটভাটা নির্মিত হলে এর বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হবে। পাহাড়ের পরিবেশ ও স্থানীয় পাহাড়িদের জীবনধারা রক্ষায় এই অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
ইটভাটা নির্মাণকারী বান্দরবান পৌরসভার কালাঘাটা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুজ্জামান মিলন বলেন, ইটের ভাটা নির্মাণের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এখনো কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি।
রুমা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দাশ বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ইটের প্রয়োজন। তাই ইটের জন্য অর্থ দিয়েছি। তবে ইটভাটার মালিকানায় আমি সরাসরি জড়িত নই।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাহাড় কেটে ‘ইটভাটা তৈরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে মালিক শ্রমিকদের। আইনগত প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। তবে ইটের ভাটার চিমনী স্থাপন করলে রেগুলার মামলা করা হবে।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, পাহাড় কেটে ইটের ভাটা তৈরির খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে লাইসেন্স না থাকলে ওখানে ইটভাটা করতে নিষেধ করা হয়েছে ।