একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতের এই দুই শীর্ষ নেতারই সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে।এ দুজন ছাড়া যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং নিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।জামায়াতের অর্থের যোগানদাতা মীর কাসেম আলী এখন ফাঁসির অপেক্ষায়। মঙ্গলবার সকালে এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।১৫ অগাস্ট শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়।
স্বজন হারানোর কথা বলার সময় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত করতেই হবে।” গুলশানের ক্যাফেতে হামলার পর পুলিশি অভিযানে কল্যাণপুরে নয়জন এবং নারায়ণগঞ্জে তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গি নিহতের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিরা যখন নিহত হয়, তখন তাদের জন্য খালেদা জিয়ার মায়াকান্না কোথা থেকে আসে, সেটাই আমার প্রশ্ন।”আরও তথ্য আদায়ে জঙ্গিদের বাঁচিয়ে রাখার কোনো চেষ্টাই করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন খালেদা জিয়া। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “তাদের বাঁচিয়ে রাখার পর কী করবে সে? পূজা করবে ?“বলে, বেঁচে থাকলে শিকড়ের সন্ধান করা যেত। শেকড়ের তো আর সন্ধান করা লাগে না, যিনি ওদের পক্ষে সাফাই গাইছেন, শিকড়টা ওখান থেকেই আসে কি না এখন সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে।”বিএনপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সব ধরনের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরীদের মদদ দিতে পারে, পুরস্কৃত করতে পারে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের পতাকা দিয়ে মন্ত্রী বানাতে পারে। যারা ভোট চুরি করে খুনিদের সংসদে বসিয়ে বিরোধী দলের নেতা বানাতে পারে। তারা সব ধরনের খুনের সঙ্গে জড়িত।”বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে চাকরি দেন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরীদের নিয়ে নির্বাচন করে সরকার গঠন করে বিএনপি।
শেখ হাসিনা বলেন, “তারা যে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত এটা তো আর মানুষকে দেখানোর প্রয়োজন নাই। “এটা তো সাধারণ মানুষ নিজের চোখেই দেখেছে যে, কারা জাড়িত।“শেকড়ের সন্ধানের জন্য আর যেতে হবে না। শেকড় তো নিজেই কথা বলে উঠছে। সেখান থেকেই পাওয়া যাবে। তাদের রেহাই নাই। এদেরও বিচার জনগণ একদিন করবে ইনশাল্লাহ।”ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান বক্তব্য রাখেন।