কাশিমপুর কারাগার
২০১৩ সালে আব্দুল কাদের মোল্লা থেকে শুরু করে দণ্ডিত সবাইকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এনে নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারের কাঁসিকাষ্ঠে নেওয়া হয়েছিল। বহু পুরনো সেই কারাগার সম্প্রতি সরে গেছে রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে, আর এর মধ্যেই আরেক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এখন শুরু করতে বাধা নেই বলে মঙ্গলবার আপিল বিভাগের রায়ের পরপরই জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম। সেক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কি কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে, না কি কাশিমপুর কারাগারে হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মধ্যে। উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কোথায় কার্যকর করা হবে, সরকারের সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
মীর কাসেম আলীতবে উভয় কারাগারের কর্মকর্তারাই বলছেন, সিদ্ধান্ত যাই হোক, তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। নাজিমউদ্দিন সড়কে কারাগার না থাকায় কেরানীগঞ্জে হোক আর কাশিমপুরে হোক, দুটি ক্ষেত্রেই মীর কাসেম হবেন প্রথম যুদ্ধাপরাধী, যার কারাদণ্ড নতুন কোনো কারাগারে হচ্ছে। ষাটোর্ধ্ব মীর কাসেম এখন রয়েছেন সুরক্ষিত কাশিমপুর কারাগারে। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তার আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার একটি সুযোগ রয়েছে একাত্তরে নির্মমতার জন্য চট্টগ্রামে ‘বাঙালি খান’ হিসেবে কুখ্যাত মীর কাসেমের।বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যে কাউকে রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষা দিতে পারলেও দুই যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে সেই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করেননি রাষ্ট্রপ্রধান। আর দণ্ডিত বাকি তিনজন প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি। মঙ্গলবার রিভিউ খারিজের রায় কাশিমপুর কারাগারে বসে শোনার পর এখন মীর কাসেমকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তিনি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করবেন কি না?
তবে কাশিমপুর কারাগারের কারা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তাদের ফাঁসিকাষ্ঠে দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। রিভিউ রায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছার পর কাশিমপুরের কারারক্ষক নাসির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফাঁসি কার্যকর র করতে যা করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলার পর বাকি কাজ সারব।”ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আগের পাঁচটি দণ্ড কার্যকরে তদারকির ভূমিকা ছিল জাহাঙ্গীর কবিরের, তবে এখন তার কারাগারই চলে গেছে কেরানীগঞ্জে। জাহাঙ্গীর কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুত তাদেরও রয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা।