ওরা জান্নাতে যেতে চেয়েছিল কিন্তু আমরা ওদেরকে দোজখে পাঠিয়েছি। এরা সন্ত্রাসী, এরা মানুষ হত্যাকারী। রাজধানীর অদূরে নারায়ণগঞ্জে অপারেশন ‘হিট স্ট্রং টুয়েন্টি সেভেন’-এ নিহত জঙ্গিদের ‘মূল হোতা’ তামিম চৌধুরীর কথা উল্লেখ পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সকল সন্ত্রাসী  হামলা এই তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বেই হয়েছে।

রাজধানীর গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় আত্মোৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক এসব কথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার বিকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এসআই সিরু মিয়া মিলোনায়তনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।

আর্থিক অনুদান দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও তার সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, মানুষের জীবন অমূল্য, টাকার বিনিময়ে জীবন হয়না, তবুও নিহতদের স্বজন ও ছেলেমেয়ের চলার জন্য এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।

তিনি বলেন, আমরা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে চারজনকে ৭০ লাখ ও মধুমতি ব্যাংক ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। ঈদে রবিউল ও সালাহ উদ্দিনের পরিবারকে কাপড় চোপড় সেমাই, চাল,ডাল কিনে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীও তাদের তিন লাখ টাকা করে ঈদ উদযাপনের জন্য দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমাদের কথা ভাবেন, আমাদের জন্য সব সময় তার মন কাঁদে। রবিউলের স্ত্রীকে চাকুরি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতিও দেন আইজিপি।

গত পহেলা জুলাই রাজধানীর গুলশানের হালি আর্টিজান রেস্তোরাঁ জঙ্গি হামলায় নিহত হন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. রবিউল করিম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন খাঁন। এর ঠিক ছয়দিন পর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহত হন কনস্টেবল আনছারুল হক ও কনেস্টেবল জহিরুল।

আজ ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এদের পরিবারের মাঝে এক কোটি ১০ লাখ টাকা ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ১৮ লাখ (মোট এক কোটি ২৮ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র) টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেওয়া হয়। এর আগে নিহতদের আত্মার শান্তির মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

আজ সহকারী কমিশনার রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালামার বাবা মো. শাহজাহানের কাছে ৫০ লাখ টাকা এবং রবিবউল করিমের মা করিমুন নেছাকে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেন। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন খানের স্ত্রী রেমকিম খানের কাছে ৩২ লাখ এবং সালাহউদ্দিন খানের পাঁচ ভাইকে আট লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র হস্তান্তর করেন। কনস্টেবল জহিরুল ইসলামের মা বেগম জোবেদা খানমকে তিন লাখ। কনস্টেবল আনছারুল হক স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম ও মা রাবেয়া আক্তারকে দেড় লাখ টাকা করে মোট তিন লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র হস্তান্তর করেন।

এছাড়া হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় আহত  পুলিশের উপপরিদর্শক ফারুক হোসেনের স্ত্রী রুমানা আক্তারকে ৬৭ হাজার, উপপরিদর্শক সুজন কুমার কুন্ডুর বড় ভাই বিপুল কুমার কুন্ডুকে ৬৭ হাজার টাকা, সহকারী উপপরিদর্শক নুরুজ্জামানের বড় ভাই সোহেল আরমানকে ৬৬ হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং এরা সবাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন আছেন। বাংলাদেশ  পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পক্ষ থেকে চার লাখ টাকা দেওয়া হয় রবিউলের স্ত্রী উম্মে সালমাকে, সালাহউদ্দিনের স্ত্রীকেও চার লাখ টাকা তুলে দেয়া হয়। জহিরুল ইসলামের মা জোবেদা খাতুনকে চার লাখ, আনছারুল হকের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম ও মা রাবেয়া বেগমকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মোখলেছুর রহমান ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031