বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী চাইলেও এবার ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি পশ্চিমাদের ওপর বিশ্বাস রাখার কথা জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শও জানিয়েছেন।
‘যেভাবেই হোক এ দেশে নির্বাচন হবেই’ বলে আওয়ামী লীগের সুধী সমাবেশে বক্তব্য আসার পরদিন গতকাল দুপুরে রাজধানীতে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। গুলশানের লেকশোর হোটেলে বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশীয়–আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সেমিনারে তিনি বলেন, যারা এভাবে কথা বলে, যেভাবেই হোক নির্বাচন হবে, নির্বাচন তো আমরাও চাই এবং সেটা জনগণের অধিকারের জন্য চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে, যেখানে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। শেখ হাসিনা চাইলেন যে, বিনা ভোটারের মাধ্যমেই তিনি নির্বাচিত হবেন, সেটা এবার হবে না। ২০১৪ সালে যা করতে পেরেছেন, ২০১৮–তে যেটা করতে পেরেছেন, এবার সেই নির্বাচন আপনি করতে পারবেন না। কারণ, এবার মানুষ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে করে সেটা সম্ভব হবে না। খবর বিডিনিউজের। মির্জা ফখরুল বলেন, আসল কথা হচ্ছে, উনি (শেখ হাসিনা) কালকে বলে দিয়েছেন, তোমরা যে যা বলো ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। অর্থাৎ যে যাই বলুক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাই বলুক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যাই বলুক, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো যাই বলি, উনার ওই সোনার হরিণ চায়। অর্থাৎ ক্ষমতায় কাউকে যেতে দেব না। টোটাল সংকটটা ওই জায়গায়।
মির্জা ফখরুল তাদের অবস্থানে অটল থাকার কথা জানিয়ে পশ্চিমা শক্তির বক্তব্যে বিশ্বাস রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, একটা কথা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, যেটা আমি আগেই বলেছি আপনাদেরকে যে, আমরা একা নই। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, পশ্চিমা বিশ্ব তারা কমিটেড টু ডেমোক্রেসি। এটার ওপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। তাদের যে কমিটমেন্ট আছে গণতন্ত্রের প্রতি, সেই কমিটমেন্ট আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, আমরা যারা লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি; এটাকে সামনে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। রাজপথেই ফয়সালা করার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। চূড়ান্ত বিজয় আমরা অবশ্যই অর্জন করতে সক্ষম হব, সেখানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তি সম্ভব হবে।
কিছু কিছু লোক ‘সবসময় হতাশায় ভোগেন’ মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, মাঠে থাকলে এই হতাশা আসে না। আমি তো আমার দলের কোনো মানুষের মধ্যে, কর্মীদের মধ্যে, নেতাদের মধ্যে কোনো হতাশা দেখি না। আমাদের সঙ্গে যারা আছেন যুগপৎ আন্দোলন যারা করছেন, তাদের মধ্যে কোনো হতাশা দেখি না। আমরা বিশ্বাস করি, এই সংগ্রামে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করব। কারণ, আমরা সত্যের পথে আছি, সঠিক পথে আছি।
সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, হাতে খুব বেশি সময় নাই, দুই মাস সময়। দুই মাসের মধ্যে লড়াই একটা চূড়ান্ত জায়গায় যেতে হবে।