গাইনি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত মো. আকিল হায়দার জিদান নামে শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের । এ ঘটনায় গতকাল মো. ফয়েজ উল্লাহ ও অভিজিৎ দাশ নামের দুই ছাত্রলীগ নেতার নাম উল্লেখ করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। এছাড়া চমেক অধ্যক্ষ এবং হাসপাতালের পরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন ওই শিক্ষানবিশ চিকিৎসক।
অভিযুক্ত ফয়েজ উল্লাহ চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) একাংশের সভাপতি। অপরদিকে অভিজিৎ দাশকে সম্প্রতি কলেজে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে তিনবছরের জন্য বহিষ্কৃত হন। এদের দুজনেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
সাধারণ ডায়েরিতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মো. আকিল হায়দার জিদান অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ৯ অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টায় মো. ফয়েজ উল্লাহ ও অভিজিৎ দাশ হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার গাইনী বিভাগের ৩৩ নং ওয়ার্ডের প্রি–অপারেটিভ রুমে এসে আমাকে তাদের একজন রোগীকে দেখতে বলে। সে সময় আমি অন্য একজন রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকায় তাদের বলি কিছুক্ষণ পর তোমাদের রোগী দেখবো। এতে তারা আমার ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে অভিজিৎ দাশ আমার শার্টের কলার ধরে দেওয়ালের সাথে ধাক্কা দেয় এবং চড়থাপ্পড় মারে। এ সময় তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। তাছাড়া জুনিয়রদের দিয়ে মারধর করানো ও আমাকে হত্যা করে লাশ গুম করারও হুমকি দেয় তারা। এই অবস্থায় আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। তারা যে কোনো সময় আমার ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। থানায় জিডি করার পাশাপাশি বিষয়টি চমেক অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করেছি।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, চমেক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসক থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। জড়িতদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধর সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।