বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে না দিলে পরিণতি ভালো হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর সমস্ত দায় দায়িত্ব সরকার নিতে হবে। আইনের দোহাই দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়া থেকে তাকে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে না দেওয়া হলে পরিণতি ভালো হবে না। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।

লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, সরকারের আইনমন্ত্রী ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার দোহাই দিয়ে বলছেন, বিদেশে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেওয়ার সুযোগ আইনে নাই। যদিও সিনিয়র আইনজীবীরা ইতোমধ্যেই বলেছেন সরকার চাইলে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে আইনে কোনো বাধা নেই।

খালেদা জিয়াকে নিয়ে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এক বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, যে ভাষায় তিনি গতকাল কথা বলেছেন, এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রমাণ হয়, দেশে তিনি যা চান, তাই হয়।

তিনি আরও বলেন, ওয়ান–ইলেভেন সরকারের সময়ে জরুরি আইনের মধ্যেও শেখ হাসিনা একজন ওয়ারেন্টের আসামি হয়েও বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। এখন তারা খালেদা জিয়ার বিষয়ে আইনের ভুল ব্যাখ্যা করছে।

খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বা অসুস্থ রেখে কোনো শর্তে বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিষ্কার কথা, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। শর্ত বা আপসের প্রশ্নই আসে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করব, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আন্দোলন করব। এরপরও যদি সরকার বাধা দেয়, তাহলে আমরাও গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুটি মামলায় সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় দিয়ে কারাগারে আটক রাখে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে স্যাঁতসেঁতে ভবনে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বেগম জিয়া। অসুস্থ বেগম জিয়াকে এক পর্যায়ে দলীয় চাপে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে কারাগারের পরিবর্তে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার জন্য নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। এরপর থেকে তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বেশ কয়েকবার তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসককে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031