তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার । তারা যখন তফসিল ঘোষণা করবেন, সেই অনুসারে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে বলে । তিনি বলেন, নির্বাচনকে যদি প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশ নেওয়ার এখতিয়ার যেকোনো রাজনৈতিক দলের রয়েছে। আমি মনে করি, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবে। খবর বাংলানিউজের।
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন গতকাল রোববার দুপুরে। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, আগামী বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম–মহাসচিব বলেছেন যে যেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেদিন থেকে সরকারের অন্তিম যাত্রা শুরু হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার তাদের। সে অনুসারে নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের চলছে।
২০১৪ সালেও তারা এমনটা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। সেই ধরনের চেষ্টা তাদের পক্ষে করা আর সম্ভবপর না। যদি এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ধূলিসাৎ করা। এটিই তাদের উদ্দেশ্য।নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশগ্রহণ করার এখতিয়ার যেকোনো রাজনৈতিক দলের আছে। আমি মনে করি, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবে। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা কেবল সরকারি দলেরই দায়িত্ব না, সব রাজনৈতিক দলের।
সিঙ্গাপুরে মির্জা আব্বাস ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কয়েকজন নেতা ও ভারতীয় মন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কোন ট্যাবলয়েড পত্রিকায় এসব লিখেছে, তা আমি জানি না। তবে আপনি ওই পত্রিকায় জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কোনো পত্রিকায় একটা নিউজ এলে তার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বৈঠক করতে ভারতীয় মন্ত্রীদের ওখানে যেতে হবে? যে পত্রিকায় তা লিখেছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন। সিঙ্গাপুরে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয়পার্টির মহাসচিবের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বিমানবন্দরে নেমে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এই প্রপাগান্ডার সঙ্গে সরকার জড়িত কিনা, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমি দেখেছি। কিন্তু মির্জা ফখরুল বলেছেন এটা অসত্য। তার বক্তব্যকেই আমরা সত্য ধরে নিচ্ছি।
আমাদের নীতি হচ্ছে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। এটাই পররাষ্ট্রনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এটা অনুসরণ করছেন। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি। আপনাদের নীতি ‘সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক, কারও সঙ্গে বৈরিতা না’। সবার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আপনাদের আগামী নির্বাচন কেমন হবে, প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন হয় দেশে, ভোট দেয় দেশের জনগণ। এর সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতি বা কার কোন দেশের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে বা সম্পর্ক নেই সেটার কোনো প্রভাব থাকা উচিত না, প্রভাব থাকে না। সেটা পররাষ্ট্রনীতির বিষয় না। তবে সব দেশের সঙ্গেই আমাদের ভালো সম্পর্ক এবং সব দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রেখে দেশের অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করেন, তারা ষড়যন্ত্র না করে থাকতে পারেন না। ষড়যন্ত্র সব সময় থাকবে। এ ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করেই তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সাড়ে ১৪ বছরে ষড়যন্ত্র কি কম হয়েছে? বিডিআর বিদ্রোহ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ষড়যন্ত্র বহু হয়েছে। সব ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দেশ এগিয়ে গেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্র থাকবে, সেগুলো ছিন্ন করে আমরা এগিয়ে যাব। তিনি বলেন, এখন ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে। তারা তো বারবার ব্যর্থ হয়েছেন এখনও ব্যর্থ হবেন।সুতরাং তারা আবার ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারে কিনা চেষ্টা করছেন।