হাই কোর্ট এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া বিপুল অংকের সম্পদ বিদেশে স্থানান্তর করেছেন বলে যে খবর বেরিয়েছে, তা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে ।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ রোববার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এই আদেশ দেয়।
গত ৪ অগাস্ট ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এদিন হাই কোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
প্রতিবেদনটি শোনার পর আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “বিদেশে অর্থপাচারের ঘটনায় দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও সংক্ষুব্ধ।”
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ এবং দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান শুনানিতে ছিলেন।
সৈয়দ সায়েদুল হক পরে বলেন, “এস আলম-এর অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের আগামী দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এই অর্থ পাচার ঠেকাতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।”
পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে ‘কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছেন যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি।
ডেইলি স্টার লিখেছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। নথি থেকে দেখা যায়, এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দু’টি হোটেল, দু’টি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পদ কিনেছে। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম বাদ রাখা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে সিঙ্গাপুরে এক লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানও এস আলমের মালিকানাধীন নয়।