পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে গবাদিপশু চুরি হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মালিকরা। তাই প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার চান তারা। গবাদিপশু পালনকারীরা বলছেন, চুরির কারণে পশু পালনে আগ্রহ কমছে অনেকেরই। তবে প্রশাসনের দাবি, তাদের তৎপরতায় এখন চোর চক্র নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
এদিকে, চুরি ঠেকাতে থেকে প্রশাসনের সহায়তা চেয়ে নানান সময়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে গবাদিপশু মালিকরা। স্থানীয়রা বলেন, কাউখালী সংরক্ষিত চরে এবং বনে বহিরাগত লোকদের গবাদিপশু চড়ানোর অবৈধভাবে অলিখিত অনুমতি দিচ্ছেন বন বিভাগ। এরফলে চুরির উপদ্রব বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে বন বিভাগের রাঙ্গাবালী রেঞ্জ কর্মকর্তা অমিতাভ বসু বলেন, ‘বন বিভাগের বনে বা চরে গবাদিপশু পালনের কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেখানে যদি গবাদিপশু থাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিট কর্মকর্তা যদি জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাউখালী গ্রামের গবাদিপশু মালিক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘গত দুই মাসে শুধু কাউখালী থেকে প্রায় অর্ধশত গরু-মহিষ চুরি হয়েছে। আর গত এক বছরে গরু, মহিষ, ছাগল-ভেড়া চুরির পরিমাণ প্রায় ২-৩ শ’। আমাদের এলাকায় এই চুরির পরিমাণ বাড়ার কারণ শুধু বন বিভাগ বহিরাগত লোকদের গবাদিপশু চড়ানোর অনুমতি দেওয়ায়। এই বহিরাগত লোকদের মধ্যেই চোরচক্র লুকিয়ে আছে। তারা সুযোগ বুঝে স্থানীয় দুই-একজন লোকের সহযোগীতায় এসব গবাদিপশু চুরি করে। কিছুদিন আগেও চুরি হওয়া গরুসহ একজনকে ধরা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমরা এর প্রতিকার চাই।’ একই গ্রামের আজাহার সরদার বলেন, ‘মাস দু’য়েক আগে আমি ৪১ দিনের চিল্লায় গিয়েছিলাম। এই ফাঁকে আমার কষ্টে অর্জিত টাকার ৬টি গরু চুরি হয়েছে। আজ পর্যন্ত সেই গরুর সন্ধান পাইনি।’
এ বিষয়ে কাউখালী ক্যাম্পের বিট কর্মকর্তা মো. কামরুল এহাসান বলেন, ‘স্থানীয়রা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে সব মিথ্যা। আমি এসবের সাথে জড়িত না।’
গবাদিপশু চুরির এ ঘটনা শুধু কাউখালীতে নাÑউপজেলার গঙ্গিপাড়া, চরকাশেম, চরহেয়ার, চরতাপসি, সোনারচর, চরকানকনিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গবাদিপশু চুরির ঘটনা ঘটছে। তবে প্রশাসনের তৎপরতায় এখন চোর চক্র নিষ্ক্রিয় বলে দাবি পুলিশের। তারা জানান, সর্বশেষ গত ২২ জুলাই ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চতলাখালী গ্রাম থেকে চুরি হওয়া একটি গরুসহ হাসান প্যাদা (৩৫) নামের একজন গ্রেফতার করে পুলিশ। হাসানের বাড়ি সদর ইউনিয়নের আমলিবাড়িয়া গ্রামে। পুলিশ জানায়, হাসান পেশাদার গরু চোর। তার বিরুদ্ধে রাঙ্গাবালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, ‘আমাদের কাছে যতগুলো গরু-মহিষ চুরির অভিযোগ এসেছে, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। গবাদিপশু উদ্ধার এবং চোর ধরতেও সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি রাতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে।’