হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জে লৌহজংয়ে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবির ঘটনায় এম.এল ইত্তেহাদ ঈশাত বাল্কহেডের মালিক, চালক ও হেল্পারদের বিরুদ্ধে । নিহত দুই বোন এপি ও পপির ভাই রোবেল বাদী হয়ে লৌহজং থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ ৩ জন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-বাহিনী, নৌ-পুলিশ ও কোষ্ট গার্ড সদস্যরা। নিখোঁজরা হলেন, খিদিরপুর গ্রামের, মাহিন, নাফা ও তুরান।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শনিবার দিনগত রাত ২টার দিকে উদ্ধার কাজ সাময়িক বন্ধ রাখে ফায়ার সার্ভিস। পরে গতকাল রবিবার সকাল ৭টা থেকে উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের রসকাঠি এলাকার ডহুরি খালে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। বেলা সোয়া ১১ টার দিকে ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. আব্দুল আউয়াল তিনি জানান, শনিবার রাতে আমরা ৪ জনের লাশ উদ্ধার করি। দূর্ঘটনার পরে স্থানীয়রা ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ৩ জনই হাসপাতালে মারা যান। এখন পর্যন্ত মোট ৭ জনের লাশ আমরা পেয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও নিহতদের আত্মীয় স্বজনরা আমাদের জানিয়েছেন তারা ৭টি লাশ পেয়েছে এবং ৩ জন শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ এই তিন শিশুকে আমরা উদ্ধারের জন্য চেষ্ঠা চালাচ্ছি।
এদিকে ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মো. শামীম মিয়া। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরাকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী এলাকা থেকে পদ্মা সেতু দেখতে পিকনিকের ট্রলারযোগে ঘুরতে আসেন ৪৬ জন নৌভ্রমন যাত্রী। পদ্মা নদীতে আনন্দভ্রমণ শেষে মাওয়া থেকে সিরাজদীখানের লতব্দী ফিরছিল পিকনিকের ট্রলারটি। রাত ৮টার দিকে ডহুরি খালের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের রসকাঠি এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মুহূতের মধ্যে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ৩৬ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যায় অনেকে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-বাহিনী, নৌ-পুলিশ ও কোষ্ট গার্ড সদস্যরা। এ পযর্যন্ত ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো ৩জন শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নিহতরা হলেন সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী গ্রামের শাজাহানের স্ত্রী মোকছেদা বেগম(৪০), খিদিরপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এপি আক্তার(২৮) ও দুই ছেলে সাকিবুল (১০) ও সজিবুল (৪),খিদিরপুর গ্রামের আফসার উদ্দিনের স্ত্রী পপি আকতার, শাহাদাত হোসেনের মেয়ে রোজা মনি(৪-মাস)ফিরোজ সরকারের ছেলে ফারিয়ান(৮)।