সাংগঠনিক দক্ষতা দায়িত্বশীলতা ও বহুমুখী প্রতিভার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাইয়ের ব্যাপারে বলেছেন, তিনি বেঁচে থাকলে আমাকে হয়তো এত বড় দায়িত্ব নিতে হতো না।
শনিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ভাইয়ের প্রশংসায় শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামালের সাংগঠনিক দক্ষতা সেটা ছিল প্রবল। কিন্তু কখনো কোনো নেতা হওয়ার চেষ্টা বা কোনো পদে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে পয়সা বানানোর চিন্তা কখনো তার মাথায় ছিল না। বরং এ ব্যাপারে সে অত্যন্ত সতর্ক ছিল। পারিবারিক-সামাজিকভাবে সে অনেক দায়িত্বশীল ছিল। কারণ আমার আব্বা তো বেশির ভাগ সময় ছিলেন জেল খানায়। সেই ছোট্ট বয়স থেকে মায়ের পাশে থেকে সংসারের কাজে কামাল সব সময় পাশে থাকতো। তার মধ্যে দায়িত্ববোধ ছোট বেলা থেকে গড়ে উঠেছিল।
শেখ কামাল পড়াশোনায়ও মনোযোগী ছিল জানিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ও পড়াশোনার দিকে অত্যন্ত মনোনিবেশ করতো। আমাদের বাসায় তো সব সময় লোকজন ভরা থাকতো তারপরও তার পড়াশোনা সে চালিয়ে গেছে।
খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, ক্রীড়াঙ্গন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট অগ্রগামী। আজ খেলাধুলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। যার ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিল শেখ কামাল। এতে কোনো সন্দেহ নাই। তার যে বহুমুখী প্রতিভা, এই বহুমুখী প্রতিভাটা বিকশিত হওয়ার আগেই চলে গেল এই পৃথিবী থেকে।
অনুষ্ঠানে শিল্পপতি, সমাজের বিত্তবানদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এগিয়ে আসতে আহ্বায়ক জানান সরকার প্রধান। একইসঙ্গে যারা খেলাধুলা থেকে অবসর নেবে তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে ও বিত্তশালীদের ক্রীড়াবিদদের কল্যাণ ফাউন্ডেশনে অনুদান দিতে আহ্বায়ক জানান।
অনুষ্ঠানে আটটি ক্যাটাগরিতে মোট ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শেখ হাসিনা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এসব পুরস্কার দেওয়া হয়।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ। শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে বক্তব্য দেন আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত আবদুস সাদেক ও সাবিনা খাতুন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
অনুষ্ঠানে শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন করা হয়। এ অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ কামাল: ক্ষণজন্মা এক নক্ষত্র’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।