গতকাল বুধবার বর্ষার শেষ দিকে এসে মৌসুমের প্রথম ভারী বৃষ্টি হয়েছে । এর সঙ্গে ছিল পূর্ণিমার জোয়ার। দু’য়ের সম্মিলনে এদিন জলাবদ্ধতার পুরনো রূপ ফিরে আসে নগরে। রাস্তাঘাট, অলি–গলিসহ তলিয়ে যায় নিচু এলাকা। পানি ঢুকে যায় অনেক দোকানপাটেও। এতে ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া সকাল সাড়ে ৭টায় কর্ণফুলী নদীতে জোয়ার আসে। দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে এসে শুরু হয় ভাটা। এদিকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় দুপুরের পর থেকে। ফলে সকালে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকার পানি নেমে যাওয়ার মুহূর্তে বিকেলে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে আবারও জলাবদ্ধতা হয়। অর্থাৎ গতকাল সকালে জোয়ার এবং বিকেলে বৃষ্টির প্রভাবে দুই দফা জলাবদ্ধতার কবলে পড়েন নগরবাসী।
অবশ্য গতকাল সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় থেমে থেমে কখনো হালকা ও মাঝারী বৃষ্টি হয়। তবে দুপুরের পর থেকে একটানা ভারী বৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, বাকলিয়াসহ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বেশি। এতে চাক্তাইয়ের কিছু কিছু গুদামে পানিও ঢুকে যায়। চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম সাংবাদিকদের বলেন, জোয়ারের পানিতে চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জ এলাকায় পানি উঠে গিয়েছিল। কিছু কিছু গুদামেও পানি ঢুকে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা জামাল হোসেন বলেন, জোয়ারের কারণে খাতুনগঞ্জে পানি উঠে। ভাটা শুরু হওয়ার পর পানি নেমে যায়। বাকলিয়ার নিচু এলাকার অনেক বাসা–বাড়িতেও পানি ঢোকে বলেও জানান তিনি। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, চাক্তাই খালের মুখে স্লুইচগেইট নির্মাণ করা হলেও তা চালু না করায় পানি উঠছে।
চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ ছাড়াও জোয়ার ও বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরের চকবাজার, কাতালগঞ্জ, বহদ্দারহাট, শুলকবহর, কাপাসগোলা, মোহাম্মদপুর, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা, ফুলতলা, ডিসি সড়ক, বাকলিয়া, মিয়াখান নগর, কে বি আমান আলী সড়ক, বগারবিল, শান্তিনগর, উর্দু গলি, ঘাসিয়াপাড়া, চকবাজার কাঁচাবাজার, হাসমত মুন্সেফ লেন, ফুলতলা, তিন পুলের মাথা, বড়পোল এলাকা।
গত রাত সোয়া ৮টার দিকেও হাঁটুর বেশি পানি ছিল চকবাজার কাঁচা বাজার জামে মসজিদের সামনের সড়কে। একই সময় চক সুপার মার্কেটের সামনে ও তেলিপট্টি সড়কেও পানি জমেছিল।
চকবাজারের বাসিন্দা আবদুল হামিদ আজাদীকে বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেও পানিতে ডুবে যাচ্ছে। আবার জোয়ার হলেও ডুবে। এ দুর্ভোগ থেকে কি আমাদের মুক্তি মিলবে না?