আওয়ামী লীগ আর কোনোভাবেই ক্ষমতায় থাকতে পারবে না বিএনপির কর্মসূচিতে জনসমর্থন ক্রমেই বাড়ছে দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন। গতকাল বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা–মামলা–গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ডেকেছিল দলটি।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নামা বিএনপির মহাসচিব সমাবেশে বলেছেন, অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই নতুন কর্মসূচি দেবেন তারা। খবর বিডিনিউজের।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, এই সরকারের পায়ের তলায় মাটি নাই, এই সরকার এখন এত ভীত, এত সন্ত্রস্ত যে তারা একটা প্রোগ্রাম থেকে ১২শ/১৩শ লোককে গ্রেপ্তার করেছে, মামলা করেছে, আহত করেছে। এইভাবে ১৪/১৫ বছর করে কি আটকানো গেছে? ২৮ তারিখে, ২৯ তারিখে দেখেছেন, মানুষ কীভাবে নেমে এসেছে। এই মানুষের ঢল থামান যাবে না, যত চেষ্টা করুন থামান যাবে না। আপনাদের ক্ষমতা ছাড়তে হবে। খবর বিডিনিউজের। ফখরুল সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, গুগলি বোঝেন? গুগলি বলে বোল্ড আউট হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ২৯ তারিখের গুগলিতে পুরো বোল্ড আউট। আওয়ামী লীগ বুঝতেই পারেনি কোন দিক দিয়ে বল কোথায় যায়? যে লক্ষ লক্ষ মানুষ ২৮ তারিখে সমাবেশে আসল, এই অবৈধ সরকারের পুলিশ ২৭ তারিখে করতে দেবে না। ঠিক আছে ২৮ তারিখে করব। ২৮ তারিখ দেখল লক্ষ লক্ষ মানুষ। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সবাই দেখেছে, সকলের একটাই কথা ‘গদি ছাড়ো’।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজকে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ভয় পাবেন না। তাহলে ভয় পাচ্ছেন। যে অন্যায়–অত্যাচার–নির্যাতন–নিপীড়ন ১৪/১৫ ধরে করেছেন, ৬শ মানুষকে গুম করেছেন, বিনা বিচারে হত্যা করেছেন, লক্ষ লক্ষ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন, অবশ্যই ভয় পেতে হবে। তারপরও বলি, এখনও সময় আছে, জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে বাধা দেবেন না। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এভাবে আমরা এগিয়ে যাব। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অবশ্যই আমরা বিজয় অর্জন করব।
কারা কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই কারা কর্তৃপক্ষকে, কোনো আসামিকে অন্যায়ভাবে যদি ব্যবহার করা হয়, সমস্ত হিসাব–নিকাশ জনগণ করবে। কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, আমরা অতি শিগগিরই সমস্ত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি দেব। তার আগে সরকারকে বলতে চাই, যাদেরকে গ্রেপ্তার করেছেন, তাদেরকে মুক্তি দিন এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
বিদেশ থেকে ভাড়া করে লোক আনছে : নির্বাচন পর্যবক্ষেক হিসেবে একদিন আগে যারা ইসিতে গিয়েছিলেন, তাদের সরকারের ভাড়া করা লোক বলে আখ্যায়িত করেন ফখরুল। তিনি বলেন, কয়েকটা লোককে বিদেশ থেকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। তার মধ্যে একেবারে আমেরিকার লোক! উনি না কি কোন ফোরামের! সে আবার ইলেকশন কমিশনে গিয়ে বক্তৃতা করে, প্রেসকে বলে যে, এখানে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট সিস্টেম চলবে না। বাহ রে বাহ! তুমি কে ভাই? ওকে এরা নিয়ে এসেছে, টাকা দিয়ে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। এটা গতবারও নিয়ে এসেছিল। কত দূর্বল হয়ে গেছে এই ধরনের নামহীন লোক নিয়ে এসে বলতে হচ্ছে কেয়ারটেকার নয়, তাদের সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি দেশে আজ ডান–বাম নির্বিশেষ সব দলের বলে দাবি করেন তিনি।
নাটক করে লাভ নেই : গত ২৯ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের ঘটনা তুলে ধরে সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ঔষধ খাইয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। হঠাৎ করে দেখি এই পরিস্থিতি। আমার সাথে কারও কোনো কথা হয় নাই। ঘুমিয়েছিলাম। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে খাওয়ানোর নামে নাটক দেখিয়েছে, আমার নামে নাটক দেখিয়েছে। আমি বলতে চাই, নাটক করে লাভ নাই। শেখ হাসিনা তোমাকে যেতেই হবে, পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতেই হবে।