প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের তাগিদ দিয়ে ‘সম্পদের মধ্যে শিক্ষা এমন একটা সম্পদ যেটা কেউ কেড়ে নিতে পারে না, সবসময় কাজে লাগবে।’ সন্তান পরীক্ষায় যেমনই ফল করুক, অন্যের সঙ্গে তুলনা করে তাকে কষ্ট না দিয়ে বরং তার দিকে আরও বেশি যত্নশীল হতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ শুক্রবার সকালে গণভবনে চলতি বছরের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের অনুলিপি এবং পরিসংখ্যান প্রতিবেদন তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এ সময় এসএসসিতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে কেন, তা দেখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অযথা ‘অমুকের ছেলে ভালো করেছে, তুমি পারলা না কেন’, এই তুলনাটা যেন না করে। এটা করা ঠিক না। কারণ সবার সব রকম মেধা থাকে না, সবার সেই চিন্তাভাবনার শক্তি থাকে না। যার যেটা দক্ষতা, সে সেই অনুযায়ীই পড়বে। যতটুকু সম্ভব, তাদের সহযোগিতা করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘অভিভাবকদের বলব, তাদের কখনো বকাবকি করবেন না। তাদেরও মনে কষ্ট আছে। তাদের আদর দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে তারা যেন পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা কৃতকার্য হতে পারেনি, মনে দুঃখ নেওয়ার কিছু নেই। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করলেই তারা ভালো রেজাল্ট করতে পারবে। একটু পিছিয়ে পড়লেও ক্ষতি নেই, তারা আবার এগিয়ে যেতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কৃতকার্য হতে পারেনি, তাদের বলব- হতাশ না হয়ে আগামীবার আরো ভালভাবে পাস করতে হবে, সেজন্য যেন তারা প্রস্তুত হতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দরকার শিক্ষার গুণগত মান আরও উন্নত করা। সারাবিশ্বের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ছেলেমেয়ারা যেন চলতে পারে।’
ছেলেমেয়েরা যাতে শিক্ষা-দীক্ষায় চিন্তা-মননে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে, সেভাবেই সবাইকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এবং অনলাইনে একযোগে ফল প্রকাশিত হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
এবছর ৩০ এপ্রিল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনের ২০ লাখ ৭৮ হাজার ২১৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৩২ শতাংশ ছাত্র ও ৫০ দশমিক ৬৮ শতাংশ ছাত্রী।