সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসির) নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া । গতকাল রাত ১০টার দিকে স্থানীয়রা সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে গিয়ে প্রায় ৭শ মিটার দূরে লাশ ভাসতে দেখতে পায় তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পানি থেকে তাদের মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে আনা হয়। উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক আমিনুল হক।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সাগর উত্তালের কারণে উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দিলেও স্থানীয়রাসহ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সৈকতের বিভিন্নস্থানে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে দুই শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়। তবে তাদেরকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটতে নামার পর নিখোঁজের এ ঘটনা ঘটে। এই দুই শিক্ষার্থী হলেন, মো. আলী হাসান মারুফ (২৩) ও এনায়েত উল্লাহ (২২)। মারুফ আইআইইউসির দাওরা ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি কুমিল্লায়। অপর নিখোঁজ শিক্ষার্থী এনায়েত চৌধুরী আইআইইউসির কোরানিক সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, তার বাড়ি ভৈরবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করার কারণে তারা সীতাকুণ্ডের গুল আহম্মদ জুট মিল গেট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় আইআইইউসির তিন শিক্ষার্থী বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসেন। সন্ধ্যায় ভাটার সময় তিনজনেই সাঁতার কাটতে সমুদ্রে নামেন। এই সময় স্রোতের টানে মারুফ ও এনায়েত নামের দুই শিক্ষার্থী ভেসে যায়। তবে নিরাপদে উপরে উঠে আসেন একরাম হোসেন নামের অপর শিক্ষার্থী।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থী নিখোঁজের খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়ার পাশাপাশি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ এবং ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন।
সমুদ্র থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থী একরাম হোসেন জানান, তারা সাঁতার কেটে সমুদ্রে কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎই স্রোতের টানে তলিয়ে যায় তার দুই বন্ধু। এ সময় সে তাদের দেখতে না পেয়ে দ্রুত সমুদ্র থেকে উপরে উঠে আসে। পরে দৌড়ে সমুদ্র পাড়ে থাকা দোকানগুলোতে গিয়ে নিখোঁজ দুই বন্ধুকে উদ্ধারে সহায়তা চায়। শিক্ষার্থীদের নিখোঁজের খবর পেয়ে আইআইইউসির শিক্ষক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. ফিরোজ ভূঁইয়া বলেন, তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও পরিস্থিতি প্রতিকূলে থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি। তাই তারা নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে চট্টগ্রাম ডুবুরি দলের সহায়তা চান। সন্ধ্যার পর সমুদ্র উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ করা হয়েছিল। এর পর রাত ১০টার দিকে স্থানীয়রা দুই শিক্ষার্থীর মরদেহের সন্ধান পায়।