মানুষের বিভিন্ন রকমের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে যত উন্নত হচ্ছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি । এই পর্যন্ত বিজ্ঞান কোনো নতুন জীবন দিতে না পারলেও নিয়েছে কতশত কোটি মানুষের জীবন তার হিসাব কেউ কখনো মিলাতে পারবে না। কিভাবে মানুষ আত্মহত্যা করবে সে পদ্ধতিও বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে। আর সহজ মৃত্যুর উপায়ও বের করেছে। যার মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডে একটি জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। তার নজীর স্থাপন করেছে অস্ট্রেলিয়ার এক তরুণী। তিনি রীতিমত আবেদন করেছেন তার মৃত্যুর জন্য এই রীতি অস্ট্রেলিয়াতে চালু আছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এরকম আবেদন করেছেন ২৮ জন। তবে বেশ আলোচিত হচ্ছে এই তরুণীর মৃত্যু নিয়ে।

জানা যায়, বেঁচেছিলেন বটে, তবে সে বাঁচা অর্থহীন! হাঁটাচলা অসম্ভব। খেতে গেলেই অসুস্থ বোধ করতেন। শরীরজুড়ে যন্ত্রণা। কয়েক বছর হাসপাতালে শয্যাশায়ী। এটিই ছিল তার পৃথিবী। এমন অবস্থায় স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিলেন অস্ট্রেলিয়ার ২৩ বছরের তরুণী লিলি থাই।

সেভেন নিউজ অস্ট্রেলিয়ার খবরে বলা হয়েছে, যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেতে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছিলেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেই আবেদন মঞ্জুর করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। বুধবার তরুণীর ইচ্ছা অনুযায়ী নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হয়েছে লিলিকে। ১০ সেকেন্ডেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

১৭ বছর বয়সে ইলার্স ড্যানলোস সিনড্রোম উপসর্গ ধরা পড়েছিল লিলির। গত কয়েক বছরে অটো-ইমিউন অটোনমিক গ্যাগ্লিয়োনোপ্যাথির সমস্যায় ভুগছিলেন। দক্ষিণ অ্যাডিলেডের ফ্লিন্ডার্স মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ধীরে ধীরে রোগীর স্নায়ুতন্ত্র অকেজো করে দেয় এই ব্যাধি। ক্রমশ বিকল হতে থাকে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। ইডিএস ধরা পড়ার বছরখানেক পর লিলির শ্বাসযন্ত্রের একাংশে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এমনকী প্রাকৃতিকভাবে মলত্যাগও করতে পারতেন না তিনি। দেখা দেয় শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা। ব্যথা উপশমের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। যদিও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। কোনও উপায় না পেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেন লিলি।

যথাসম্ভব ‘দ্য বাকেট লিস্ট’ এর কথা, শেষ সাধ পূরণের কথা জানান। তার মধ্যে ছিল সমুদ্রতটে ঘোরা। লিলির সেই সাধপূরণের ব্যবস্তা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সি-বিচে পৌঁছে গিয়েছিল যাবতীয় মেডিক্যাল সরঞ্জাম-সহ অ্যাম্বুলেন্স। বিছানায় শুয়েই অনন্ত সমুদ্রের অগুনতি ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়েছিলেন লিলি। নরম পানীয়ের স্বাদও নিয়েছিলেন।

সেই ছবি সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়। আসলে লিলির কঠিন অসুখ এবং স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন শোরগোল ফেলে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। সেই শোরগোল অবশ্য বিষাদের।

খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৮ জন নাগরিককে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। তবে মৃত্যুর আগে যেকোনও মুহূর্তে নিজেদের সেই সিদ্ধান্ত বদল করতে পারেন তারা। তাদেরই অন্যতম লিলি।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031