পুলিশ গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার করে । পোস্ট মর্টেম রিপোর্টেও এসেছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার কথা। কিন্তু জন্মদাতা পিতা মেয়ের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। তার দাবী নির্যাতন পূর্বক হত্যা করে গলায় ফাঁস দেয়ার নাটক সাজানোর আয়োজন করে তার মেয়ের শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। ফলে মৃত্যুর ঘটনার দুই মাস পরে আদালতের দারস্থ হন তিনি, করেছেন মামলা। বিজ্ঞ আদালত থানা পুলিশকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শনা দিয়েছেন। অন্যদিকে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্ত করার জন্য আদালতের আবেদন করবেন তিনি। তার বিশ্বাস তার আদরের মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি ময়না তদন্ত রিপোর্টটিও সাজানো বলে তার দাবী। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের।
সরেজমিনে জানা যায়, গত দেড় বছর পূর্বে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে মুক্তা আক্তার অন্নীর সাথে একই উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের শোসাইরচর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে মো.সোহাগ হোসেন’র সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দু’মাস পর সোহাগ হোসেন নব-বিবাহিতা স্ত্রী মুক্তা আক্তার অন্নীকে বাড়িতে রেখে জীবিকার তাগিদে পূর্বের ন্যায় প্রবাসে চলে যায়।
গত ১৭ মে মুক্তা আক্তার অন্নীর শ্বাশুড়ী মনোয়ারা বেগম দুইপুত্র বধূকে বাড়িতে রেখে তাঁর মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান।
এই সময় তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন তার ছোটপুত্র বধু অন্নী আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। থানা পুলিশ ঘটনাটিকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।
মৃত গৃহবধূর শাশুড়ী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলে সোহাগ হোসেন বিদেশে থাকে, বিদেশ থেকে ছুটিতে আসলে তাঁকে বিয়ে করাই। আমার ছেলের শ্বশুর তার মেয়ের অন্য ছেলের সম্পর্ক গোপন করে আমার ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। আমার ছেলে বিয়ের দু’মাস পরে বিদেশে চলে গেলে তাঁর স্ত্রী পূর্বের ওই প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক তৈরী করে আমার ছেলেকে তালাক দেয়ার কথা বলে। আমরা বেয়াই-বেয়াইনকে জানালে তাঁরা বিষয়টি গোপন রাখেন।
গৃহবধূর বাবা চাঁন মিয়া বলেন, আমার মেয়েকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়েছি। আমরা জানতাম না জামাইর ভাবির সাথে তার পরকিয়া সম্পর্ক। আমার মেয়ে জানতে পেরে আমাদেরকে জানিয়েছে। আমরা মেয়েকে শান্তনা দিয়েছি জামাই বাড়িতে আসলে বিষয়টি সমাধান হবে। কিন্তু তারা দেবর ভাবির পরকিয়া টিকিয়ে রাখতে আমার মেয়েকে মেরে মরদেহ সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখছে। ঘটনার দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, পুলিশ অভিযোগ আমলে নেয়নি। তাই আমি আদালতে মামলা করেছি। লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করবো। আমি ন্যায় বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মান্নান বলেন, চাঁন মিয়ার দায়েরকৃত মামলাটি আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।