ডাবল লাইনে উন্নীত হয়েছে ঢাকা–চট্টগ্রাম ৩১২ কিলোমিটার রেলপথের পুরোটাই । গত ২০ জুলাই এই রেলপথের লাকসাম–আখাউড়া ৭২ কিলোমিটার ডাবল রেললাইনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। প্রকল্প কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের কাছ থেকে জানা গেছে, লাকসাম–আখাউড়া ৭২ কিলোমিটার ডাবল রেললাইনের কাজ শেষ হলেও এখন কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ এবং স্টেশন এলাকায় সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ বাকি আছে। নিরাপদ ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সিগন্যালিং সিস্টেমের ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ শেষ হতে আরো দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে। এই কাজগুলো শেষ হলে ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। এখন প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেন (সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস) ঢাকা–চট্টগ্রাম পৌঁছাতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলা শুরু করলে এক ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। তখন রাতের বেলায় সুবিধাজনক সময়ে আরো একটি আন্তঃনগর ট্রেন যুক্ত হবে বলে জানা গেছে। এই ব্যাপারে পূর্বাঞ্চল থেকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রাম ৩১২ কিলোমিটার রেলপথের পুরোটাই ডাবল লাইন হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০ জুলাই উদ্বোধন করেছেন। তবে সামান্য কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি আছে। কিছু কিছু স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ বাকি আছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে এক ঘণ্টা সময় কমে আসবে। এখন সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস গন্তব্যে পৌঁছাতে সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগছে। তখন সাড়ে ৪ ঘণ্টা থেকে পৌনে ৫ ঘণ্টায় পৌঁছাতে পারবে। ওই সময় আরো একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলবে।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস আজাদীকে বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথ পুরোটাই ডাবল লাইন হয়ে যাওয়ায় এখন প্রতিটি আন্তঃনগর ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। এই রুটের সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস পৌঁছাতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা লাগে। তূর্ণাসহ অন্যান্য আন্তঃনগরগুলোর ৬ ঘণ্টা লাগে। ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে এখন প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারলেও ক্রসিং এলাকা গুলোতে একটু স্লো গতিতে চলতে হয়। এই কারণে সাড়ে ৪ ঘণ্টা থেকে পৌনে ৫ ঘণ্টা লাগতে পারে। অন্যান্য ট্রেনেরও ১ ঘণ্টা সময় বাঁচবে।
আখাউড়া–লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন আজাদীকে বলেন, আখাউড়া–লাকসাম ৭২ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণের মধ্যদিয়ে ঢাকা–চট্টগ্রাম রেললাইন পুরোটাই ডাবল লাইন ডুয়েলগেজে উন্নীত হয়েছে। ঢাকা–চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম–ঢাকা রুটের প্রতিটি আন্তঃনগর এবং মেইল এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় বাঁচবে। বিশেষ করে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে আমরা সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবো। তবে কিছু কাজ বাকি আছে; এগুলো শেষ হলে যাত্রীরা উপকৃত হবেন।