আদালত প্রায় ২৩ বছর আগে কক্সবাজার শহরে ডাকাতি করতে গিয়ে এক প্রবাসীকে হত্যার ঘটনায় জামাতাসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন । একইসাথে মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় নয়জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোশারফ হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। হত্যার শিকার মোহাম্মদ হোসেন কক্সবাজার শহরের বাঁচামিয়ার ঘোনার বাসিন্দা। তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হল– কক্সবাজার শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টেকনাইফ্যা পাহাড় এলাকার মো. হাছানের ছেলে মঞ্জুর হোসেন, মৃত মো. কাছিম ওরফে বলীজুরীর ছেলে মো. আলম ও আমির হোসেনের ছেলে আকতার কামাল, পাহাড়তলী এলাকার মো. সৈয়দের ছেলে শহর মুলুক ওরফে কালু ও আব্দুর শুক্কুরের ছেলে মো. মোস্তাক, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার এখলাস মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে কালুইন্যা, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে শাহাব উদ্দিন এবং শহরের উত্তর রুমালিয়ারছড়া এলাকায় বসবাসকারী ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে জসিম উদ্দিন। এছাড়া ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হল কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার বাসিন্দা এখলাস মিয়া।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শওকত বেলাল জানান, গত ২০০০ সালের ১৩ জুন সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ হোসেন দেশে আসলে এর দুইদিন পর ১৫ জুন রাতে তার জামাতা মঞ্জুর হোসেনের নেতৃত্ব একদল দুর্বুত্ত বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে লুটপাট চালায়। এতে বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা মোহাম্মদ হোসেনকে মাথার পিছন থেকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ ঘটনার দুদিন পর ১৭ জুন নিহতের স্ত্রী ছবুরা খাতুন বাদী হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যাসহ ডাকাতি আইনে মামলা দায়ের করেন। প্রায় ৫ বছর তদন্তের পর ২০০৫ সালের ২৩ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শওকত বেলাল বলেন, এরপর মামলার দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্য প্রমাণসহ প্রয়োজনীয় বিচারপ্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। এতে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ২ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া এক আসামিকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ৯ জন আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের পাশাপাশি খালাস পাওয়াদের মধ্যে ৫ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।