শুরু হয়েছে জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্লাজায় আহলে বায়তপ্রেমী জনতার অংশগ্রহণে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদে আসর হতে শুরু হওয়া প্রথম দিনের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মুহাম্মদ মিজানুর রহামান।
প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, সত্য–মিথ্যার দ্বন্দ্বে কারবালা ময়দানে সত্য ও ন্যায়নীতির বিজয় সূচিত হয়েছে। সত্য ও হকের প্রশ্নে আপসহীন থাকাই শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা। জমিয়তুল ফালাহর এ কারবালা মাহফিল মুসলমানদের ঈমানি চেতনাকে জাগ্রত করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী আহমদ বিন ইউসূফ আল আজহারী। প্রধান বক্তা ছিলেন ভারত থেকে আগত আন্তর্জাতিক ইসলামী স্কলার আল্লামা সৈয়দ হাশেমী মিয়া আশরাফ আশরাফি আস সিমনানি। তিনি বলেন, মহররম মাস এলে আমরা ঈমানি চেতনা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াই। এই মহররম মাস নানা ঘটনা, স্মৃতি ও সাক্ষ্য বহন করে। ৬১ হিজরিতে কারবালা ময়দানে প্রিয় নবীর (দ.) দৌহিত্র হয়রত ইমাম হোসাইন (রা.) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) ওপর দুরাচার ইয়াজিদ বাহিনী যে জঘন্য নৃশংসতা চালিয়েছে দুনিয়ার ইতিহাসে এই বর্বরতার কোনো তুলনাই হয় না। আল্লামা হশেমী মিয়া বলেন, ইয়াজিদিদের অন্তর দিয়ে ঘৃণা করা এরং আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি ভালোবাসা ও পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শনই ঈমানের দাবি। জমিয়তুল ফালাহর আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল মুসলমানদের ঈমানি চেতনা শাণিত করছে এবং আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি ভালোবাসার দিক নির্দেশনা প্রদান করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সভাপতির বক্তব্যে সূফি মিজানুর রহমান বলেন, শাহাদাতে কারবালার ঘটনা মনে এলে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। নরাধম ইয়াজিদ ও তার দোসররা আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) ওপর যে জঘন্য নির্মমতা দেখিয়েছে তাতে তারা ধিক্কারের পাত্র হয়েছে। কারবালা ময়দানে সত্য মিথ্যার যুদ্ধে হয়রত ইমাম হোসাইনের (রা.) নেতৃত্বে নবী পরিবারের বিজয় ঘটেছে। জমিয়তুল ফালাহর আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের সূচনাকারী খতিবে বাঙাল অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দীন আলকাদেরী (রহ.) এর ত্যাগ ও আবদানের কথা তিনি স্মরণ করেন। মাহফিলে উদ্বোধক ছিলেন জমিয়তুল ফালাহর খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালিব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, আহলে বায়তে রাসূলের (দ) প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসার নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন। তাঁদেরকে ভালোবাসা ও আনুগত্য করা ফরজ। তাই আমরা তাঁদের প্রতি মহব্বত পোষণ করি। মাহফিলে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, সৈয়দ মুহাম্মদ নূরানী আশরাফি আস–সিমনানী।
আহলে বায়তের মুহাব্বত ও কারবালার স্মৃতিচরণ নিয়ে আলোচনা করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রভাষক হাফেজ মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রিয় নবী (দ.) বলেছেন, আমি আমার উম্মতের কাছে কিছুই চাই না। শুধু চাই আমার পরিবার তথা আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসা। আলোচক ছিলেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ আহমদুল হক। মাহফিলে অতিথি ছিলেন, আঞ্জুমান–এ–রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যন পেয়ার মোহাম্মদ, মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ সোলায়মান আনছারী, মাওলানা সৈয়দ আমিনুল হক আলকাদেরী, ইফা বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ আবু আহসান, শায়খ আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, ব্যারিস্টার আবু সাঈদ মুহাম্মদ কাশেম। মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের খোরশেদুর রহমান, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহম্মদ সওদাগর, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম, দিলশাদ আহমদ, ব্যংকার হাফেজ ছালামত উল্লাহ, এস এম শফি, মাহাবুবুল আলম, মনসুর সিকাদার, মাইনুদ্দীন মিঠু, শাহাব উদ্দিন, জহির উদ্দিন, খোরশেদ আালী চৌধুরী, নাজিব আশরাফ প্রমুখ ৬ষ্ঠ দিবস থেকে পর্দা সহকারে মহিলাদের মাহফিলে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা থাকবে। মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে sufitv.com, www.shahadat-e-karbala.com. প্রেস বিজ্ঞপ্তি।