পাকিস্তানের এক নীল চোখের চা বিক্রেতার কথা। যাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে হৈ চৈ পড়ে যায়। মনে আছে তো। সেই চা বিক্রেতা উপমহাদেশ ছাপিয়ে ইউরোপ আমেরিকায়ও ভাইরাল হয়। তার হাতে বানানো চা খেতে চেয়েছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। সালমান খানও তখন তার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। মূলত এই কারণে সে ভাইরাল হয়। সে চা বিক্রেতা এখন লণ্ডনে। পাকিস্তান গিয়ে চাল খেতে না পারলেও এবার লন্ডনে গিয়ে নিশ্চিত সেই নীল চোখের চা বিক্রেতার চাতের বানানো চা খেতে পারবেন শাহরুখ ও সালমান খান।

২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নীল চোখের পাকিস্তানি চা বিক্রেতা আরশাদ খান এবার লন্ডনে চায়ের দোকান চালু করেছেন। ছবি ভাইরালের পর রাতারাতি খ্যাতি অর্জন করে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন এই চা বিক্রেতা।

আরশাদ খানের নীল চোখের ছবি তুলেছিলেন পাকিস্তানের আলোকচিত্রী জিয়াহ আলী। ছবিতে দেখা যায়, ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে চা তৈরি করছেন তিনি। ছবি ভাইরাল হওয়ার পর বদলে যেতে থাকে তার জীবনের রং। নীল চোখের পাকিস্তানি এই চা বিক্রেতা দেশে-বিদেশে আলোচনায় আসেন। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মডেলিং, বিজ্ঞাপনে অভিনয় এবং একটি মিউজিক ভিডিওতেও অভিনয় করেন।

সেই আরশাদ খান এখন পূর্ব লন্ডনের ইলফোর্ড লেনে একটি ক্যাফে চালু করেছেন; যেখানে অনেক পাকিস্তানি, বাংলাদেশি এবং ভারতীয় নাগরিকের বসবাস। পাকিস্তানি ধাবা-স্টাইলের কেটলিতে তৈরি করা আরশাদ খানের ‘দেশি কারাক চা’ পাওয়া যাবে ওই ক্যাফেতে।

ইনস্টাগ্রামে ক্যাফেটারিয়ার শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, দোকানটির ভেতরের সব কারুকার্য দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে সাজানো হয়েছে। এর দেয়ালে আঁকা হয়েছে প্রাণবন্ত সব চিত্র আর মাটির পাত্রের শিল্পকর্ম।

‘প্রথম আন্তর্জাতিক চায়ের দোকান’ খোলার ঘোষণা দিয়ে আরশাদ খান বলেছেন, তিনি শিগগিরই লন্ডন ক্যাফেতে হাজির হবেন এবং ভক্তদের মাঝে নিজ হাতে বানানো চা পরিবেশন করবেন।

তিনি বলেছেন, আমি লন্ডন সফরের পরিকল্পনা করছি। প্রিয় ভক্তদের জন্য আমি চা বানাতে চাই। আমি লন্ডন সফরের জন্য হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছি। আমাদের প্রথম আন্তর্জাতিক চায়ের দোকান এখন ইলফোর্ড লেনে খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। দুররানি ভাইদের সাথে আমরা ইলফোর্ড লেনে চায়ের দোকান চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ সেখানে প্রচুরসংখ্যক পাকিস্তানি এবং ভারতীয় বসবাস করেন; যারা চা অনেক পছন্দ করেন। আমি শিগগিরই লন্ডনে যাবো।

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ‘ক্যাফে চাই ওয়ালা’ নামে আরশাদ খানের একটি ক্যাফে রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ২০২০ সালে এটি চালু করেছিলেন তিনি। ইসলামাবাদের একটি ভবনের ছাদে এই ক্যাফের অবস্থান। এই ক্যাফের আদলেই ডিজাইন করা হয়েছে লন্ডনের ক্যাফেরও। চা ছাড়াও আরশাদ খানের ক্যাফেতে ১৫ থেকে ২০ ধরনের খাবার পাওয়া যায়।

নাদির দুররানি, বাহাদুর দুররানি এবং আকবর দুররানি নামের তিন সহোদর লন্ডনে আরশাদ খানের ‘ক্যাফে চাই ওয়ালা’ ব্র্যান্ড চালু করেছেন। তারা যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশেও এই ব্র্যান্ড চালু করার পরিকল্পনা করছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই।

২০১৬ সালে অনলাইনে তারকা বনে যাওয়া আরশাদ খান লন্ডনের ইস্টার্ন আই নামের একটি ম্যাগাজিনের করা ‘এশিয়ার সবচেয়ে আবেদনময়ী পুরুষের’ তালিকায় জায়গা পান। ওই তালিকায় ৩১তম স্থান অর্জন করেন তিনি। বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশন ও ফাওয়াদ খানের মতো পাকিস্তানি তারকাদের সাথে সেই তালিকায় স্থান পান আরশাদ খান। সূত্র: এএনআই।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031