২০২০ সালে এসে স্বাস্থ্য ব্যয়ে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস ১৯৯৭-২০২০’ এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে । মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ে ব্যক্তিগত বা নিজ পকেট থেকে খরচের পরিমাণ ৬৪ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশে হ্রাস করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা বাস্তবায়িত না হয়ে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে আরও বাড়ছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
বুধবার সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে ‘হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।
এসময় বক্তারা বলেন, দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে উচ্চরক্তচাপের রোগী। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে এর ওষুধ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। তাদের দাবি, অনেকেই উচ্চরক্তচাপ পরীক্ষা করেন না। ফলে তাদের স্ট্রোকঝুঁকিসহ অন্য রোগ বেড়ে আরও অর্থব্যয় বাড়ছে। তাই পরীক্ষা ও ওষুধের পেছনে যদি ১ টাকা ব্যয় করা হয়, তাহলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া যায়।
তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দেশের জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ হওয়া উচিত। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৫ শতাংশ, জিডিপির মান দশমিক ৭৬ শতাংশ। কিন্তু গত অর্থবছরেও এই বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, জিডিপির দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ বাজেটে বরাদ্দ বাড়ার বদলে উল্টো কমছে।
বক্তারা আরও বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চরক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চরক্তচাপের ওষুধ (এমলোডিপিন ৫ মি. গ্রা.) সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এটি এখন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ কমাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য ২ থেকে ৩ মাসের ওষুধ একসাথে দেওয়ার ব্যবস্থাপত্র-পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। তিনি জানান, হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজিতে (২০১২-২০৩২) ২০৩২ সালের মধ্যে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।