বৈকালিক সেবা পটিয়া হাসপাতালের । প্রতিদিন সেবা নিচ্ছেন গড়ে ৪ জনেরও কম একই সেবা নিতে বেসরকারিতে পর্যাপ্ত ডাক্তার থাকার পরও পটিয়া সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক সেবায় ‘আগ্রহ নেই’ রোগীদের। বেসরকারি হাসপাতালের অর্ধেকেরও কম ফি প্রয়োজন হয় এই সেবা নিতে। কিন্তু তাতেও রোগীর সংকট দেখা যাচ্ছে। গত ৩ মাসে এখানে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন মাত্র ৩–৪ জন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানামুখী প্রচারণা চালিয়েও বৈকালিক চিকিৎসায় রোগী টানতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সরকারী নির্দেশনা মতে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৩০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বৈকালিক চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ৭ জুলাই পর্যন্ত ৩ মাসে এখানে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন মাত্র ২৭১ জন। এ হিসেবে গড়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিয়েছেন মাত্র ৩ জন থেকে সামান্য বেশি। এরমধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা নিয়েছেন ২১২ জন, মেডিকেল অফিসারের সেবা গ্রহণ করেছেন ৫৯ জন, ল্যাব টেস্ট করেছেন ২০ জন, বিভিন্ন ছোট বড় অপারেশন করেছেন ২০ জন।
কিন্তু আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলোতে ভিন্ন চিত্র। এসব জায়গায় বিকেলে বিভিন্ন রোগীদের চাপ দেখা গেলেও সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসায় রোগী নেই বললেই চলে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, পটিয়া হাসপাতালে বর্হিবিভাগে নিয়মিত সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। এছাড়া জরুরি বিভাগে প্রতিদিন সেবা নিয়েছেন ১৮০ থেকে ২০০ জন এবং অন্তবিভাগে গড়ে ৭০–৮০ জনের উপরে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। এর পাশাপাশি গত ৩০ মার্চ থেকে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা শুরু হয়। শুক্রবার ও সরকারি বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৯ জন কনসালটেন্ট সপ্তাহে রোস্টার ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে মেডিসিন, গাইনী, সার্জারি, অর্থোসার্জারি, নাক–কান–গলা, কার্ডিওলজি, এনেস্তেশিয়া, চর্ম ও যৌন, শিশু ও ডেন্টাল সার্জন চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত বৈকালিক চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফি ৩০০ টাকা ও মেডিকেল অফিসারের ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সব্যসাচী নাথ বলেন, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা বৈকালিক চিকিৎসায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তাতেও বৈকালিক চিকিৎসায় আশানুরূপ রোগী পাওয়া যাচ্ছে না। রোগীদের মাঝে বিশ্বাস তৈরি করতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে ৫/৮শ টাকায় যে সেবা পাচ্ছে সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসায় ২/৩শ টাকায় একই চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। তাতেও রোগীরা আসছে না।
তিনি আরো বলেন, অনেক ডাক্তার প্রমোশন নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। যার কারণে রোগীরা এসে তার পছন্দের ডাক্তার না পেয়ে চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যায়। এতে তারা সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসায় বিশ্বাস বা আস্থা হারাচ্ছে।