সরকার একের পর সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনা মোতায়েনের কথাও ভাবছে । ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসকে এ কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। জাতিসংঘ কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। খবর বিডিনিউজের।
বৈঠক শেষে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি একজন সঙ্গীকে নিয়ে এসেছিলেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে সহিংসতা বাড়ছে, সে বিষয়েই মূলত তারা কথা বলেছেন। তিনি (গোয়েন লুইস) আরও বলেছিলেন, সেখানে আমাদের আর্মি এবং বর্ডার গার্ড সবাই রয়েছে, সহিংসতা কেন হচ্ছে? তিনি আর্মির এসওপির কথা বলেছেন, সেটা আমরা ফলো করছি কিনা? সবগুলো নিয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এটাই বলেছি যে, ছোট একটি জায়গায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষ এখানে, নানান ধরনের সমস্যা তো এখানে থাকবেই; সেসব সমস্যা থেকে তৈরি হবে সহিংসতা। সহিংসতায় শুধু তারাই মারা যাচ্ছে না। আমাদের সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ অফিসারও মারা গেছেন, এয়ারফোর্সের একজন দক্ষ অফিসার মারা গেছেন। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল রয়েছি, আমাদের সক্ষমতাও আমরা বাড়াচ্ছি, যাতে করে কিলিং বন্ধ হয়। এটাই আমরা তাকে (গোয়েন লুইস) জানিয়েছি।
আর্মি আমাদের স্ট্যান্ডবাই থাকে সবসময়, যদি প্রয়োজন হয় আমরা আর্মিকেও ব্যবহার করব। সেই এসওপি আমরা তৈরি করেছি। সেই এসওপি অনুযায়ী প্রয়োজন হলে আমরা ব্যবহার করব, সেটি আমরা তাকে জানিয়ে দিয়েছি। দমন–পীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে সীমান্ত জেলা কঙবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায়। যে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা থাকে, সেখানে ধারাবাহিকভাবে সংঘাত চলছে। গত সাড়ে পাঁচ বছরে সেখানে ১৩২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে সম্প্রতি সংসদীয় একটি কমিটির বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার টেকনাফ ও উখিয়ার স্থানীয় মানুষদের যে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, তা নিয়েও জাতিসংঘ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে টেকনাফ ও উখিয়াতে চার লাখ (স্থানীয়) রয়েছেন, তারাও এখন অসহায় হয়ে গেছে। তাদের ফরেস্ট নষ্ট হয়ে গেছে, তাদের লবণ ফিল্ড নষ্ট হয়ে গেছে। এসবগুলোও রোহিঙ্গাদের দখলে চলে গেছে। এসব নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা বলে দিয়েছি, যত আর্লি পসিবল তারা তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাবে, আমরা যেটি মনে করি, আপনারাও সেই কাজটি করবেন।