প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি কলাবতী শাড়ি ও হস্তশিল্প পণ্য উপহার হিসেবে । গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার হাতে কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি ৩টি শাড়ি এবং গহনার দুটি বাঙ তুলে দেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরীজি।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস জানিয়েছেন, সাড়ে ১৩ হাত দীর্ঘ এবং আড়াই হাত প্রস্থের শাড়িটি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় তৈরি করেছেন মণিপুরী তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী। প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া শাড়ি তিনটি তৈরি করেছেন অঞ্জলী দেবী ও দত্ত সিংহ। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রের বিশেষ ‘মাচাং হাউজের’ মডেল, জেলা ব্র্যান্ডের ক্যালেন্ডার এবং ব্র্যান্ড বুকও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক। খবর বিডিনিউজের।
কলাগাছের বাকল ব্যবহার করে এতদিন বাহারি হস্তশিল্প তৈরি হচ্ছিল দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তবে এবার প্রথমবারের মতো কলাগাছ থেকে পাওয়া সুতা দিয়ে বান্দরবানে বানানো হয় শাড়ি। জামদানির মতো চমৎকার নকশার এই শাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কলাবতী’।
কলাগাছের সুতা (তন্তু) থেকে তৈরি করা বিভিন্ন হস্তশিল্পের পাইলট প্রকল্প ধরে এই সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছিলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন। তার ভাষ্যে, বান্দরবানে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই এখানকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। সেই চিন্তা থেকেই কলাগাছের তন্তু থেকে সুতা তৈরি করা হয়। বান্দরবান জেলায় অসংখ্য কলাগাছ রয়েছে। ফল সংগ্রহের পর গাছটি কেটে ফেলে দেওয়া হয়। সেই ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকেই সুতা তৈরি করা হয়। সেই সুতা থেকে পর্দার কাপড়, পাপোজ, ব্যাগ, কলমদানি ও বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরি করার পর পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শাড়ি তৈরির।
তিনি জানান, প্রথমবার নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হওয়ায় শাড়িটির দাম এখনই ঠিক করে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে সাত থেকে আট হাজার টাকায় বিক্রি করা হলে তাঁতিরা লাভবান হবেন। শাড়িটি বর্তমানে বান্দরবানের ব্র্যান্ডিং ‘অপরূপা বান্দরবান’ এর আওতায় থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি আর দাবি না করে তা হলে প্রথমবারের মতো কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরি বান্দরবানেরই ব্র্যান্ডিং হবে।