মো. আরিফুল ইসলামকে কারাগারে পাঠান রায় ঘোষণা হয়ে যাওয়া একটি চেকের মামলায় আত্মসমর্পণ করলে বিচারক । এরপর জানা গেল তিনি নকল আসামি। মূল আসামি নজরুল ইসলামের স্থলে তিনি ‘প্রক্সি’ দিয়েছেন। গত ১২ জুলাই চট্টগ্রামের দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এই ঘটনার চারদিন পর গত রোববার আসল আসামি নজরুল ইসলামও একই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে আসল, নকল দুজনই কারাগারে রয়েছেন।
দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মো. আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর পর কারা কতৃপক্ষ তাকে পরীক্ষা করেন। তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে দেখেন। এতেই বের হয়ে আসে তিনি নকল আসামি। আসল আসামি নজরুল ইসলামের নামে তিনি প্রক্সি দিয়েছেন। বিষয়টি কারাগার কতৃপক্ষ আদালতকে অবহিত করেছেন উল্লেখ করে ওমর ফারুক বলেন, এর মধ্যে আসল আসামি আত্মসমর্পণ করলে তাকেও বিচারক কারাগারে পাঠিয়ে দেন। দুজনই এখন কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার বিচারক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন। এই কাজ অবশ্যই প্রতারণার। আইনী ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে।
এদিকে মো. আরিফুল ইসলামের আইনজীবী মো. আবুল কাশেম তার (আরিফুলের) ও অপর দুজনের বিরুদ্ধে গতকাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন। অন্য দুজন হলেন আসল আসামি নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী পরিচয় দানকারী জহিরুল ইসলাম। আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী মো. আবুল কাশেম বলেন, বগুড়ার নজরুল ইসলাম নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে মো. আরিফুল ইসলামকে সাথে করে চেম্বারে আসেন। এসে রায় হয়ে যাওয়া একটি চেকের মামলায় মো. আরিফুল ইসলাম আত্মসমর্পণ করবে মর্মে জানান। …কাগজপত্রও দেখি ঠিক আছে। আমরা তো আর আসামি চিনি না। মোট কথা এইখানে আমাদের ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা অসম্মানিত হয়েছি। আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এ জন্য আমরা আদালতের দ্বারস্ত হয়েছি। আদালত বিষয়টি দেখার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে নজরুল ইসলামের (আসল আসামি) বিরুদ্ধে চেকের মামলাটি দায়ের হয়। মামলার রায়ে তাকে এক বছরের সাজা ও চেকের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা করা হয়। এর বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম ফৌজদারী আপিল দায়ের করেন। কিন্তু আদালত আপিল খারিজ করে দেন এবং সাজা বহাল রাখেন। পাশাপাশি তাকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।