স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান এবং আইসিটি ফর ডেঙ্গু (আইজিজি ও আইজিএম) টেস্ট ফি এতদিন একশ টাকা নির্ধারিত ছিল। তবে গত ১২ জুলাই জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে আরো ৫০ টাকা কমিয়ে ডেঙ্গু টেস্ট (প্রতিটি টেস্ট) ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে । এর মাধ্যমে সরকারি সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৫০ টাকায় ডেঙ্গু টেস্ট করার সুযোগ পাচ্ছেন রোগীরা।
আর বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাবের ক্ষেত্রে এই ডেঙ্গু টেস্ট (এনএস–ওয়ান এবং আইসিটি ফর ডেঙ্গু) ফি প্রতিটি তিনশ টাকায় নির্ধারণ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি এই নির্দেশনা মেনে চলতে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর বার্তাও দেয়া হয়। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই নির্দেশনা মানলেও বেশ কিছু বেসরকারি ল্যাব ঠিকই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলেছে। নগরীর বাকলিয়া এলাকার কালামিয়া বাজার মোড়ের কে বি হেলথ কেয়ার নামে বেসরকারি একটি ল্যাবের বিরুদ্ধেও সরকারি এই নির্দেশনা না মানার অভিযোগ। প্রতিষ্ঠানটি ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান টেস্টের ফি হিসেবে রোগীদের কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করছে। যা সরকার নির্ধারিত ফি’র তুলনায় ১২০০ টাকা বেশি। গত ১০ জুলাই বেসরকারি ল্যাবটিতে একজন রোগীর ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান টেস্ট করানোর রশিদ হাতে এসেছে। তাতে দেখা যায়– ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান টেস্ট ফি হিসেবে দেড় হাজার টাকা উল্লেখ রয়েছে রশিদে।
এছাড়া নিডল এবং রেড টিউবের ফি ধরা হয়েছে ৩০ টাকা। সবমিলিয়ে এই টেস্টের (ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান) ফি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৩০ টাকা। যদিও ৫৩০ টাকা ডিসকাউন্ট দেখিয়ে রোগীর কাছ থেকে এক হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
রিসিপশনে দায়িত্বে থাকা এক মহিলা ফোন রিসিভ করেন। তার কাছে ডেঙ্গু এনএস–ওয়ান টেস্ট ফি কত নেয়া হয় জানতে চাওয়া হলে দেড় হাজার টাকা বলে জানান ওই মহিলা। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সব নির্দেশনা মেনে চলছে কী না জানতে চাইলে পাশে থাকা আরেকজনকে মোবাইল ধরিয়ে দেয়া হয়। জোনায়েদ হাসান নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির কো–অর্ডিনেটর হিসেব পরিচয় দেন। ডা. মহিউদ্দিন নামের এক চিকিৎসক প্রতিষ্ঠানটির মালিক বলে জানান তিনি। তবে মালিকের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলতে চাননি।
জানতে চাইলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি ল্যাবে ডেঙ্গু টেস্ট ফি তিনশ টাকার বেশি নেয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। নির্দেশনা অমান্য করে বেশি আদায়ের তথ্য পেলে শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
এদিকে, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য অপরিহার্য অপর টেস্ট সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) বাবদও বেশি ফি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে বেসরকারি অনেক ল্যাবের বিরুদ্ধে। বেসরকারি ল্যাবে সিবিসি টেস্ট ফি চারশ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই টেস্ট বাবদ অনেক প্রতিষ্ঠান সরকারি নির্ধারিত ফি’র বেশি টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ রোগীদের।