বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে বিএনপি আওয়ামী লীগের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হলে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না বলে ।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রতি সারাবিশ্বের নজর কেন এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “কেন ইইউ এর টিমকে এসে বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে মতামত দিতে হচ্ছে? দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে তো তাদেরকে যেতে হচ্ছে না। কেন তাদের আসতে হচ্ছে এদেশে? আমাদের দেশে মানুষের মনে যেমন প্রশ্ন তেমনি স্বাভাবিকভাবে ওনাদের মনেও প্রশ্ন আছে।”
আমীর খসরু বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন যে প্রশ্নবিদ্ধ এটাই তো ভিত্তি। এ বিষয়গুলোর দিকেই তারা নজর রাখছে। তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের কনসার্ন প্রকাশ করেছেন।”
এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন তো দূরে থাক নির্বাচনের আগেই ভোট চুরি চলছে। ডিসিদের পোস্টিং হচ্ছে; পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পোস্টিং হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর হামলা চলছে।”
“গতকালকে পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সময় অনেকের ওপর হামলা করা হয়েছে। সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটা তো অব্যাহতভাবে চলছে,” বলেন তিনি।
“এই সরকার জোর করে জনগণকে বাইরে রেখে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতায় আসবে,” এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “এ নিয়ে ইইউ দলের প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনা হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, এই সরকারের অধীনে বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবে ভোট দিতে পারবে না।”
“তাদের প্রতিনিধি, সংসদ, সরকার কোনটাই নির্বাচিত করতে পারবে না। দিনের আলোর মতো পরিষ্কার বিষয় এগুলো। সকলের জানা আছে,” বলেন তিনি।
বিএনপি সংলাপে বসবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “এটি হচ্ছে ডেমোক্রেটিক অর্ডার, এদেশে তো ডেমোক্রেসি অনুপস্থিত। মানবাধিকার নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। প্রথমে তো সেই ইনভায়রমেন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। তারপরে সংলাপের বিষয়টা আসছে।”
এর আগে সকাল ৯টায় বৈঠকটি শুরু হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপি মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বৈঠকে অংশ নেন। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের ছয় সদস্য বৈঠকে অংশ নেন।
এখন জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে প্রতিনিধি দলটির বৈঠক শুরু হয়েছে। গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয়ে বৈঠকটি শুরু হয়।
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক শেষে এদিন বনানীর শেরাটন হোটেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে ইইউ প্রতিনিধি দলটি।
জামায়াতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এছাড়া ইইউর গুলশানের কার্যালয়ে বেলা আড়াইটায় এবং এবি পার্টির নেতৃত্ব দেবেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম।জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ও বিকেল চারটায় আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সঙ্গে বৈঠক হবে।