ঢাকা ওয়াসার চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। পানির বিল এখন ১০০ শতাংশ আদায় করতে সক্ষম ওয়াসা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ঢাকা মহানগরে ২৬০ কোটির লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ঢাকা ওয়াসা এখন ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা ওয়াসার দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (পয়ঃশোধনাগার) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের শুভ উদ্বোধন করেছি, ইতিমধ্যে আরেকটি, পাগলা পয়ঃশোধনাগারের ভিত্তি স্থাপন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায়, তখন ঢাকা শহরে মাত্র ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল এক কোটি বিশ লাখের মতো। পানি উৎপাদন হতো ১২০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার পানির বিল মাত্র ৬৪ শতাংশ আদায় হতো। রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি আর আমার ছোট বোন জার্মানিতে ছিলাম। মিলিটারি ডিক্টেটর আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভরসা করে আমি এক প্রকার জোর করে দেশে চলে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় সংগ্রাম।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে কোনো দেশের উন্নতি হয় না। পৃথিবীর কোনো দেশে মিলিটারি ডিক্টেটর উন্নতি করতে পারে না, এটা হলো বাস্তবতা। ২১ বছর সংগ্রামের পর ’৯৬ সালে আমরা সরকারে আসি, মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানোর জন্য প্রথম সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করি। সেভাবে শুরু হয় আমাদের পথ চলা।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশকে বদলে দেব। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসা শহরের পানি সরবরাহের স্থায়ী সমাধানের জন্য ২০১৪ সালে একটি ওয়াটার মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে। এই পরিকল্পনার আওতায় পদ্মা নদীর তীরে জশলদিয়া এলাকায় দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার পানি শোধন করে ঢাকা শহরে সরবরাহের জন্য পদ্মা পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প এবং মেঘনা নদীর পানি ব্যবহার করে ধলপুর এলাকায় ৪৫ কোটি লিটার পানি শোধন ক্ষমতার সায়েদাবাদ ওয়াটার প্লান্ট ফেস-১, ফেস-২, ফেস-৩ আমরা করি। সবগুলো আওয়ামী লীগ আমলে করা। ইতোমধ্যে পদ্মা পানি শোধনাগার চালু করা হয়েছে, বাকি দুটির কাজও চলমান রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে উৎস থেকেই ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ করা যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়ান, ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথোরিটির (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম উপস্থিত ছিলেন।