উর্ধ্বমুখী আলুর বাজার অনেক দিন ধরে । বর্তমান বাজারে অন্যান্য সবব্জির দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে আলু চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা বাড়ার কারণে হিমাগার ও মজুতদাররা পরিকল্পিতভাবে আলুর দাম বৃদ্ধি করছেন এমন অভিযোগ ভোক্তাদের। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা জানান, প্রতি বছর দেশে এক কোটি টন আলু উৎপাদিত হচ্ছে। এরমধ্যে দেশে ব্যবহার হয় ৭০ লাখ টনের মতো। তবে চলতি বছর তুলনামূলকভাবে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। গত বছরের চেয়ে অন্তত ২০ থেকে ২২ শতাংশ কম উৎপাদন হয়েছে। কোল্ডস্টোরেজে যে আলু আছে তার মধ্যে ৬০ শতাংশ খাওয়ার এবং ৪০ শতাংশ বীজ আলু। মূলত উৎপাদন কম হওয়া এবং বাজারে চাহিদা বাড়ার কারণে আলুর দাম বেড়েছে।
গতকাল নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি মুন্সিগঞ্জের আলুর বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। খুচরা বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার জানান, অবস্থা বুঝে কিছু কোল্ড স্টোরেজ মালিক কম দামে আলু কিনে মজুদ করে রাখেন। সরবরাহ সংকট তৈরি করে পরিকল্পিতভাবে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। আড়তদারদের বেশি মুনাফা করার সুযোগ নাই। কারণ আলু বেশি দিন গুদামজাত করে রাখা যায় না। তারওপর এখন আবহাওয়া খুব উত্তপ্ত। এদিকে গত সোমবার কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে আলুর দাম ১০ শতাংশ এবং এক বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। অথচ পাইকারি পর্যায়ে আলুর দাম কোনোভাবে ২৪ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কৃত্রিমভাবে আলুর বাজার অস্থির করার চেষ্টার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীদের সরকারি বিভিন্ন তদারকি সংস্থা ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন বলেন, বাজারে আলুর সংকট দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে। আমাদের দেশে আলুর চাহিদা সব সময়ই থাকে। চাহিদার সাথে সরবরাহের ঘাটতিও দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
বাজারে প্রত্যেক সবজির দাম চড়া। এক মাত্র ২০–৩০ টাকা দরে আলু পাওয়া যেতো। এখন সেটিও আকাশচুম্বি। এভাবে মানুষের জীবন যাপনের ব্যয় বাড়লে পরিবার চালাতে হিমশিত খেতে হবে। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাবো আলুর বাজারে যেন নিয়মিত অভিযান চালানো হয়।