একমাত্র তার দল আওয়ামী লীগই পারে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার প্রত্যাশা প্রকাশের পর একথা বলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনীতে সংসদ নেতা ও বিরোধী নেতা বক্তব্য রাখেন। গত ১ জুন শুরু হওয়া এই অধিবেশনে ২৬ জুন ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে হওয়া সব উপনির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ হয়েছে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে। সেটা আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি।’

তার আগে বক্তব্যে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা, সংঘাত ও প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকুক, আমরা তা চাই না। ‘অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে একটি মডেল নির্বাচনে পরিণত করবে, এটাই প্রত্যাশা।’ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসিকে সহায়তা দিতে সরকার বাধ্য– এই মন্তব্য করে বিরোধী নেতা বলেন, ‘অতএব ইসি নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকলেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায়।’

এরপর সমাপনী বক্তৃতায় সরকার প্রধান শেখ হাসিনা অতীতের বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে নির্বাচন ছিল একেকটা গ্রুপ ঢুকবে, সিল মারবে, বাক্স ভরবে, তারপর রেজাল্ট পাল্টাবে। সাধারণ মানুষই বলত– ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। আওয়ামী লীগ সবসময় সংগ্রাম করে গেছে জনগণের ভোটাধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।’

২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ নির্বাচন নিয়ে অন্তত কেউ কোনো কথা বলতে পারেনি। ওই নির্বাচনে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এক সমান হতে পারে না। আওয়ামী লীগের জন্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে । বিএনপির জন্ম হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে। সেই সেনা শাসকের পকেট থেকে এ দল।’

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে যারা সরব, তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে মানবাধিকারের খোঁজে আসে অনেকে। আমার প্রশ্ন ২০০১ এর নির্বাচনে যেভাবে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ হয়েছিল, তখন সেই মানবাধিকার ফেরিওয়ালারা কোথায় ছিল? তারা কেন চুপ ছিল? তাদের মুখে কেন কথা ছিল না কেন?’

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগ সরকার অন্য দেশের নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে কেন? কীভাবে করবে। একথা বলে কীভাবে? সারা বিশ্বে তো বহু জায়গায়, বহু মানুষ খুন হচ্ছে। এমন কি আমেরিকায় তো প্রতিদিন গুলি করে করে শিশুদের হত্যা করছে। স্কুলে, শপিং মলে, রাস্তায় হত্যা হচ্ছে। এমন কী বাঙালি মেয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যা করছে। প্রতিদিনই তো তাদের প্রতিটি স্টেটে গুলি করে করে হত্যা করছে। ঘরের মধ্যে গিয়ে পরিবারসহ হত্যা করছে। নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষা তাদের আগে করা উচিৎ। তারা নিজের দেশের মানুষকে বাঁচাবে কী করে, সেই চিন্তা আগে করুক। সেটাই তাদের করা উচিৎ’– বলেন তিনি।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031