গত পনের দিনে শত বিঘা আবাদি জমি তিস্তা নদীর ভাঙনে কুড়িগ্রামে , অর্ধ শতাধিক বাড়ি-ঘর ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরো দেড় শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নিলেও ভাঙন কবলিত মানুষ বসতবাড়ি রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ভাঙন কবলিতদের নিজস্ব জমিজমা না থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের বাড়িঘর সড়িয়ে খোলা আকাশে ফেলে রেখেছে। ঈদের ১০/১২ দিন আগে থেকেই এখানে ভাঙন চলছিল। জিও ব্যাগ দিয়ে সরকারি স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করা হলেও জিও ব্যাগসহ সেটি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ সময় ভেঙে গেছে আরো ৪৫ থেকে ৫০টি বসতবাড়ি। সবজি ও পাটক্ষেতসহ শত বিঘা আবাদি জমি নদী গ্রাস করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে গাছপালা-পুকুর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
নদী তীরবর্তী শহিদুর ইসলাম (৫৬) জানান, ভাঙনে বজরা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আর রক্ষা করা যায়নি। সেই সঙ্গে ঠিকানা হারিয়েছে অর্ধ শতাধিক পরিবার। আরো দেড় শতাধিক বসতবাড়ি রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে।
বজরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, এই নিয়ে ১২ বার আমার বসতবাড়ি নদীর কবলে পরলো। এখন দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। নদীর উপরেই আমাদের সমস্ত জমিজমা পরে আছে। এদিকে আমাদের ঠাঁই নেয়ার মতো কিছুই নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তার মধ্যে জিনিসপত্র রেখেছি। এখন আমারা কোথায় যাবো, কি করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।
ভাঙন কবলিত নুর আলম (৬০) জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লোকজন এসে ১৮০ মিটার খোলা জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলবে বলে জানিয়েছে। জিও ব্যাগ ফেলে কোন কিছু রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা ত্রাণ-টাকা-পয়সা কিছুই চাই না। আমরা তিস্তা নদীতে স্থায়ীভাবে নদী প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম চাই।
বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক জায়গায় ভাঙন হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, লোকালয় ভাঙন কবলে পরলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। পশ্চিম বজরায় আমরা জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছি।